ভোটার লিস্টে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল ৫ নির্বাচনী অফিসারের বিরুদ্ধে (Election Commission)। নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছিল এই পাঁচ আধিকারিককে সাসপেন্ড করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর ও করতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কথা অমান্য করে তাদের চিঠি পাঠানো হয় রাজ্যের তরফে। কার্যত এই চিঠিতেই চটেছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের শাসকদলের এই ঠান্ডা লড়াই আজকের নয়। বাংলায় SIR বিরোধিতা থেকে শুরু করে বীরভূমের ভাষা আন্দোলনে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন BLO দের না বলে দিল্লিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কেন।
মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিবকে না জানিয়ে এই কাজের নিন্দা করেন তিনি। শুধু তাই নয় দিল্লিতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত BLO ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। কিন্তু যদি পাঁচ দুর্নীতিগ্রস্থ অফিসারের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবার তার জবাব চায় কমিশন।
তাই এর ই ফলশ্রুতিতে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হল মুখ্য সচিব মনোজ পন্থকে। আগামীকাল বিকেল ৫ টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। এই ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেস এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চলতে থাকা সংঘাতকে আরও উস্কে দিয়েছে।
এই তলব রাজ্যের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, এবং এটি রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সম্পর্কের উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। মুখ্য সচিবকে তলবের আরও একটি কারণ হল এই দুর্নীতি গ্রস্থ আধিকারিকদের কর্মকান্ডের অভ্যন্তরীন তদন্ত। নির্বাচন কমিশনের মতে তাদের আদেশের পরেও কেন রাজ্যের মধ্যে তদন্ত করা হচ্ছে ?
তৃণমূল নেতারা এই পদক্ষেপকে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তৃণমূলের একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, “নির্বাচন কমিশনের এই তলব রাজ্যের স্বায়ত্তশাসনের উপর আক্রমণ। এটি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নির্দেশে করা হচ্ছে।” তৃণমূলের আরেক নেতা অভিযোগ করেছেন যে, নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একতরফা পদক্ষেপ নিচ্ছে।
অন্যদিকে, বিজেপি এই তলবকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে। বিজেপির এক নেতা বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ সঠিক এবং সময়োপযোগী।”মনোজ পন্থ একজন অভিজ্ঞ আইএএস অফিসার, যিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের ওয়াশিংটন দফতরে ভারতের প্রতিনিধি ছিলেন।
তিনি রাজ্যের বিভিন্ন সংকটকালীন পরিস্থিতিতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। আরজি কর কাণ্ড এবং ওবিসি সার্টিফিকেট মামলায় তিনি রাজ্যের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং কলকাতা হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিয়েছেন। তবে, নির্বাচন কমিশনের এই তলব তার প্রশাসনিক কার্যকলাপের উপর নতুন চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
অভিষেক-সঞ্জুতে আস্থা,ভারতের এশিয়া কাপ স্কোয়াডে চমক!
দুর্নীতিগ্রস্ত নির্বাচনী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ এই তলবের কেন্দ্রীয় বিষয়। এই ঘটনা থেকে ধারণা করা যেতেই পারে যে নির্বাচন কমিশন তার কাছ থেকে জবাবদিহি চাইবে এই দুর্নীতিগ্রস্থ নির্বাচনী আধিকারিকদের ব্যাপারে। সে ক্ষেত্রে মুখ্য সচিব কিভাবে তার সাফাই পেশ করেন তা আগামীকাল বোঝা যাবে।