বিধানসভা ভোটের আগে কর্মী-জওয়ানদের ভাতা বাড়াল নির্বাচন কমিশন

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জন্য বড়সড় সুখবর দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। ভোট প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠু ও…

"Election Commission Starts Training for BLOs in West Bengal Ahead of 2026 Assembly Elections

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জন্য বড়সড় সুখবর দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। ভোট প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠু ও কর্মীবান্ধব করার উদ্দেশ্যে কমিশন ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা, যা অনুযায়ী এবার প্রায় সব স্তরের কর্মীরা বাড়তি অর্থ পাবেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রিসাইডিং অফিসার ও কাউন্টিং সুপারভাইজারদের দৈনিক ভাতা ৩৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে। পোলিং অফিসারদের ক্ষেত্রে ভাতা ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০০ টাকা হয়েছে। কাউন্টিং অ্যাসিস্ট্যান্টদের জন্যও একইভাবে দৈনিক ভাতা ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫০ টাকা করা হয়েছে।

   

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা আগের মতো দৈনিক ২০০ টাকা না পেয়ে এবার পাবেন ৩৫০ টাকা। তবে যাঁরা কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা পর্যন্ত ভাতা বরাদ্দ করা হয়েছে। একইভাবে ভিডিও সার্ভেলেন্স বা মনিটরিং কমিটি দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য সর্বোচ্চ ৩০০০ টাকা পর্যন্ত ভাতা দেওয়া হবে।

ভোটকর্মীদের খাবারের খরচের জন্যও বড় পরিবর্তন এনেছে কমিশন। আগে এই খাতে দৈনিক মাত্র ১৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও, এবার তা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে, যা কর্মীদের জন্য বাড়তি স্বস্তি বয়ে আনবে।

শুধু ভোটকর্মীরাই নন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের ক্ষেত্রেও ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

কমান্ড্যান্ট, ডেপুটি কমান্ড্যান্ট ও অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্টরা আগে ১৫ দিনের কাজের জন্য ২৫০০ টাকা পেতেন, এখন তাঁরা পাবেন ৪০০০ টাকা। ১৫ দিনের বেশি কাজ করলে প্রতি সপ্তাহে ২০০০ টাকা করে অতিরিক্ত ভাতা মিলবে।

ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টররা ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করলে পাবেন ৩০০০ টাকা, তার বেশি হলে প্রতি সপ্তাহে ১৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে।

Advertisements

কনস্টেবল ও হেড কনস্টেবলরা ১৫ দিনের মধ্যে কাজ করলে পাবেন ২৫০০ টাকা, আর বেশি হলে প্রতি সপ্তাহে ১২৫০ টাকা।

এছাড়াও সেক্টর অফিসার ও সেক্টর পুলিশ অফিসারদের জন্য এককালীন ১০,০০০ টাকা ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে।
ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসাররা নির্বাচনী কাজে যুক্ত থাকলে, তাঁদের এক মাসের বেসিক বেতন ভাতা হিসেবে প্রদান করা হবে।

প্রশাসনিক মহলের মতে, এই পদক্ষেপ শুধু কর্মীদের আর্থিক স্বস্তি দেবে না, বরং তাঁদের দায়িত্ব পালনের মনোবলও বাড়াবে। ভোটের দিন দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় কর্মীদের। সেই প্রেক্ষিতে ভাতা বৃদ্ধি কর্মীদের মনোবল ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

একজন জেলা নির্বাচন দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, “ভাতা বৃদ্ধি হলে কর্মীদের মধ্যে কাজের আগ্রহ আরও বাড়বে। বিশেষ করে খাবার ভাতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি তাঁদের জন্য স্বস্তির খবর।”

নির্বাচন কমিশনের এই ঘোষণা ইতিমধ্যেই ভোটকর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের অর্থনৈতিক প্রণোদনা ভোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠু ও কার্যকর করতে সাহায্য করবে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাই কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই।