কলকাতা, ৩ অক্টোবর: দুর্গাপূজার বিজয়াদশমীর এই উৎসবের মুহূর্তে বঙ্গের আকাশ কালো মেঘাচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে (Weather)। ভারতীয় উল্লেখযোগ্য আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) আজকের আবহাওয়া পূর্বাভাসে স্পষ্ট সতর্কতা জারি করেছে—উত্তর বঙ্গ ও দক্ষিণ বঙ্গের বেশিরভাগ এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সাথে বিচ্ছিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা।
বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের উপর গঠিত নিম্নচাপ এলাকা এই বৃষ্টির জন্য দায়ী, যা দশমী উদযাপন ও প্রতিমা বিসর্জনকে ব্যাহত করতে পারে। আইএমডি’র কলকাতা অফিস থেকে জারি করা সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, আজ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে ৬৪.৫ মিলিমিটার থেকে ১১৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে, যা কলকাতা, সাউথ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় বিশেষভাবে প্রভাব ফেলবে। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর ও উত্তর দিনাজপুরে অনুরূপ পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।
আইএমডি’র পূর্বাভাস অনুসারে, আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ স্থানে মেঘলা আকাশ থাকবে, এবং বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত চলতে থাকবে। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, যখন সর্বনিম্ন ২৪ ডিগ্রির কাছাকাছি। আর্দ্রতার হার ৮৫% থেকে ৯০% পর্যন্ত উঠতে পারে, যা শহরের রাস্তায় জলাবদ্ধতা ও যানজট সৃষ্টি করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে গঠিত ঘূর্ণিঝড়ীয় পরিবেশ এই বৃষ্টিকে আরও তীব্র করে তুলেছে। ফলে, কলকাতার লো-লাইং এলাকা যেমন এসপ্ল্যানেড, পার্ক স্ট্রিট, গড়িয়াহাট ও ঢাকুরিয়ায় জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকার ইতিমধ্যে সবুজ সতর্কতা জারি করে দিয়েছে, এবং নগরীর ট্রাফিক পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে।
উত্তরবঙ্গের কথা বললে, সাব-হিমালয়ান অঞ্চলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর। আইএমডি’র বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২ অক্টোবর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এই অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সাথে বিচ্ছিন্নভাবে ভারী বৃষ্টি হবে, এবং ৩ তারিখে সুবর্ণরেখা, তিস্তা ও রাজভাটখাওয়া নদীতে জলস্ফীতির ঝুঁকি রয়েছে।
দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন সতর্কবাণী জারি করেছে। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে চা বাগানের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ এই বৃষ্টি ফসলের ক্ষতি করতে পারে। উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা আজ ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, কিন্তু বাতাসের গতি ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় থাকায় শীতল অনুভূতি হবে।
আইএমডি’র রিপোর্ট অনুসারে, বঙ্গোপসাগরের উত্তর ও মধ্য অংশে ঝড়ো বাতাস ৪০-৬০ কিলোমিটার গতিতে বইছে, যা উত্তরবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় প্রভাব ফেলবে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে আজকের আবহাওয়া আরও চ্যালেঞ্জিং। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা কৃষকদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
দুই ম্যাচে পরাজয়ের পর গোয়া কি পারবে ACL 2 নকআউটে যেতে?
আইএমডি’র সতর্কতায় বলা হয়েছে, সমুদ্র উপকূলে উচ্চ ঢেউ (১.৭ থেকে ৩.২ মিটার) উঠতে পারে, তাই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কলকাতার প্রতিমা বিসর্জনের সময় হুগলি নদীতে জোয়ার-ভাটার কারণে জলের স্তর বাড়তে পারে, যা বিসর্জনকে বিপজ্জনক করে তুলবে।