দীঘায় টানা ৮ ঘণ্টার প্রবল বর্ষণে জলমগ্ন পর্যটনকেন্দ্র, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে সোমবার সকাল থেকেই ভাসছে দক্ষিণবঙ্গ। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নিউ দিঘার (Digha) বিস্তীর্ণ এলাকা। যদিও…

Eight Hours digha of Torrential Rain Lash Tourist Hub, Businesses Face Heavy Losses

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে সোমবার সকাল থেকেই ভাসছে দক্ষিণবঙ্গ। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নিউ দিঘার (Digha) বিস্তীর্ণ এলাকা। যদিও হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে নিউ দিঘার হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড সংলগ্ন এলাকায়। প্রায় হাঁটু-সমান জল জমে গেছে ওই অঞ্চলের একাধিক রাস্তায়। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাড়িঘর থেকে শুরু করে পর্যটনকেন্দ্রের বহু হোটেল। প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, অন্তত ১৫০টি হোটেল(Digha) এদিন জলবন্দি হয়ে পড়ে।

হোটেলগুলির প্রবেশদ্বারে জল ঢুকে পড়েছে, ফলে পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকেরই জানালার ধারে জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে একদিকে যেভাবে ছুটি কাটানোর আনন্দে দিঘায় এসেছিলেন পর্যটকরা, অন্যদিকে সেই আনন্দ মুহূর্তে পরিণত হয়েছে দুশ্চিন্তায়।

   

পর্যটক তমালিকা সাহা জানান, “গতকালই আমরা এসেছি। ভেবেছিলাম সমুদ্রসৈকতে হাঁটাহাঁটি করব, কিন্তু সকাল থেকে এই যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আর থামছেই না। হোটেলে জল ঢুকে পড়ায় বেরোতে পারছি না। খাবারও আনতে সমস্যা হচ্ছে।” হোটেল ব্যবসায়ীরাও চিন্তিত। বহু হোটেল মালিক জানাচ্ছেন, পর্যটন মৌসুমের একেবারে আগে এই ধরনের জলবদ্ধতা তাঁদের ব্যবসায় বড় ধাক্কা দেবে। অনেক পর্যটকই বুকিং বাতিল করে ফিরে যেতে চাইছেন। ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্য বলেন, “প্রতিবারই বৃষ্টি হলে একই চিত্র দেখা যায়। নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত না হলে পর্যটন শিল্প মার খাবে। আমরা প্রশাসনের কাছে বারবার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু বড় কোনও কাজ হয়নি।”

Advertisements

অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, হেলিপ্যাড এলাকা এবং নিউ দিঘার নীচু অংশে পাম্প বসিয়ে জল নামানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কর্মীরা নেমেছেন। এছাড়াও পর্যটকদের সুরক্ষার জন্য সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশের দল মোতায়েন করা হয়েছে। তবুও জল নামতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে মনে করছেন অনেকে।

নিউ দিঘা মূলত একটি পর্যটননির্ভর এলাকা। এখানে শতাধিক ছোট-বড় হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি বছরই বর্ষার সময় এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি হয়। নিকাশি ব্যবস্থার অভাব, ড্রেন পরিষ্কার না করা, এবং পর্যাপ্ত পাম্পের অভাবের কারণে জল দ্রুত নামতে পারে না। ফলে আটকে পড়েন পর্যটকরা এবং ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।