কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে তলব ED-র

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর নজরে এলেন রাজ্যের কারা মন্ত্রী তথা বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা চন্দ্রনাথ সিনহা (Chandranath Sinha)।…

Governor's Approval Received, Court's big move against Chandranath Sinha

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর নজরে এলেন রাজ্যের কারা মন্ত্রী তথা বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা চন্দ্রনাথ সিনহা (Chandranath Sinha)। তাঁকে তলব করা হয়েছে আগামী ৩১ জুলাই, দিল্লিতে ইডি-র দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

ইডি-র এই তলবের নেপথ্যে ঠিক কোন মামলা বা আর্থিক লেনদেন রয়েছে, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের দাবি, কোনও আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তে তাঁর নাম জড়িয়েছে বলেই এই পদক্ষেপ। ইতিমধ্যেই তদন্তের স্বার্থে বেশ কিছু নথি তলব করা হয়েছে, এবং সেই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই দিল্লিতে হাজিরার নির্দেশ।

   

এই তলব নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল হতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ইডি-র এই পদক্ষেপকে ‘প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি’র অংশ বলেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন,

“বিজেপি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করছে। বাংলার জনপ্রতিনিধিদের হয়রানি করার জন্য ইডি-সিবিআইকে সামনে আনা হচ্ছে।”

অন্যদিকে বিজেপির দাবি, “যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের আইনের সামনে দাঁড়াতেই হবে। তদন্তে কার নাম উঠে আসে, সেটা বড় কথা নয়, আইনের কাজ করতে দিতে হবে।”

এখনও পর্যন্ত চন্দ্রনাথ সিনহার পক্ষ থেকে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দিল্লিতে হাজিরা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একই সঙ্গে আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন তাঁর আইনজীবী দলের কাছ থেকে।

Advertisements

বীরভূম জেলা তৃণমূলের অন্যতম মুখ চন্দ্রনাথ সিনহা। তাঁর এই তলবকে ঘিরে জেলার রাজনীতিতেও আলোড়ন পড়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল কর্মীরা এই পদক্ষেপের প্রতিবাদে রাস্তায় নামার পরিকল্পনা করছেন বলেও জানা গিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মতে,

“বীরভূমে যাঁরা জনপ্রিয়, তাঁদেরকেই নিশানা করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ বুঝে গিয়েছে কে সত্যি আর কে মিথ্যে।”

উল্লেখ্য, এর আগেও রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও প্রাক্তন মন্ত্রীকে ইডি ও সিবিআই তলব করেছে। শিক্ষা, কয়লা, গরু পাচার কাণ্ডে একাধিক হেভিওয়েট নেতার নাম উঠে এসেছে। এবার কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার নাম যুক্ত হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে—তদন্তের পরিধি কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে চলেছে?

চন্দ্রনাথ সিনহাকে ইডি-র তলব রাজ্য রাজনীতিতে যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ৩১ জুলাইয়ের এই হাজিরা নিয়ে নজর থাকবে প্রশাসন, রাজনীতি এবং সাধারণ মানুষের। বাংলার রাজনীতিতে আবারও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠছে—এটা কি সত্যিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, না কি রাজনৈতিক চাপ তৈরির হাতিয়ার?