শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) ভেড়ির টাকা পাচারে যুক্ত রাজ্যের দুই থেকে তিনজন মন্ত্রী। সোমবার আদালতে বিস্ফোরক এই দাবি করল কেন্ত্রীয় এজেন্সি ইডি। একই সঙ্গে ইডি আদালতে দাবি করেছে, জমি-ভেড়ি দখলের টাকাতেই শাহজাহান অস্ত্র ভান্ডার গড়ে তুলেছিল। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের আত্মীয় আবু তালেব মোল্লার বাড়ি থেকে শুক্রবার বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করে সিবিআই। যদিও এই তালেব এখনও নিরুদ্দেশ।
সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহানকে আজ, সোমবার দুপুরে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। প্রাক্তন তৃণমূল নেতার আইনজীবী শাহজাহানের জামিনের আবেদন জানাননি আজ। অন্যদিকে ইডির আইনজীবী আদালতে বলেন, শাহজাহান অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক। তার জামিন হলে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সওয়াল-জবাব শুনে আদালত ১৩ মে অবধি শাহজাহানের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
ইডি আদালতে জানিয়েছে, শাহজাহানের বেশ কিছু আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, জমি-ভেড়ি দখলের টাকাতেই শাহজাহান অস্ত্র ভান্ডার গড়ে তোলে। একই সঙ্গে শাহজাহানকে ফেরি সার্ভিস সহ একাধিক সরকারি টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছে আদালতে দাবি করে ইডি। শাহজাহানের ভেড়ির টাকা পাচারে রাজ্যের ২-৩ জন মন্ত্রী জড়িত বলেও আদালতে জানান ইডির আইনজীবী।
যদিও কোনও তিনজন মন্ত্রী শাহজাহানের কালো টাকা পাচার করেছে, সে বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি ইডির আইনজীবী। সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার এক প্রভাবশালী মন্ত্রী এই অবৈধ কার্যকলাপে যুক্ত। বাকি দুই মন্ত্রীও দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দা বলে খবর।
গত শুক্রবার সন্দেশখালিতে অভিযানে যায় সিবিআই। সরবেড়িয়ায় ভেড়ি ঘেরা একটি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে তারা। সিবিআইয়ের সঙ্গে ওই অভিযানে ছিল NSG-ও। রিমোটচালিত রোবটও নিয়ে আসা হয়। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ৭টি স্মল আর্মস উদ্ধার হয়েছে।
এই ৭টির মধ্যে ৪টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বাকিগুলি দেশি পিস্তল। ২২৮ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে দেশি বোমা। একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি পরিচয়পত্র, সোনার গয়নার ব্যাগ এবং বিল উদ্ধার হয়েছে। ইডির হারিয়ে যাওয়া নথিও উদ্ধার হয়েছে।
চলতি বছর ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে যায় ইডি। সেদিন ইডির ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। জখম হন বেশ কয়েকজন আধিকারিক। এরপর থেকেই বেপাত্তা ছিল শাহজাহান। ফেব্রুয়ারির শুরুতে সন্দেশখালির বাসিন্দাদের একাংশ শাহজাহানের বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করে। এর পর ফেব্রুয়ারির শেষে গ্রেফতার হয় শাহজাহান।