অবৈধ বালি পাচার চক্রে ফের ইডির অভিযান, তল্লাশি একাধিক জেলায়

ED Raid Sand Smuggling West Bengal

কলকাতা: বৃহস্পতিবার রাজ্যের একাধিক জায়গায় অভিযান চালালো এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গজুড়ে সক্রিয় বালি পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী ও সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কলকাতা, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন স্থানে একযোগে অভিযান শুরু হয় সকাল থেকেই।

Advertisements

ইডি সূত্রে খবর, কলকাতার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, ঝাড়গ্রামের লালগড় ও গোপীবল্লভপুর, এবং আসানসোলের একাধিক স্থানে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আসানসোলে বালি ব্যবসায়ী মনীশ বাগাড়িয়ার বাড়ি ও অফিসে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায় ইডির টিম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ— রাজ্যের একাধিক বালিঘাট থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ও পাচারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি এবং সেই অর্থ মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে।

ইডির এক আধিকারিক বলেন, “আজকের অভিযান অবৈধ বালি খনন সংক্রান্ত মানি লন্ডারিং মামলারই অংশ। সকালে থেকেই আমাদের একাধিক দল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অভিযান শুরু করেছে। ব্যবসার হিসাবপত্র, নথি এবং সম্পত্তির তথ্য আমরা যাচাই করছি।”

তদন্তে জানা গিয়েছে, মনীশ বাগাড়িয়া দক্ষিণবঙ্গের একাধিক বালিঘাটে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে যুক্ত এবং বালি উত্তোলন, পরিবহণ ও বিক্রির মূল চক্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, বাগাড়িয়ার সঙ্গে যুক্ত আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীর নামও তদন্তের আওতায় এসেছে।

এদিন লালগড় এলাকায় ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বালি খনিতেও অভিযান চালায় ইডি। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অনুমতিহীনভাবে বালি তোলার অভিযোগ রয়েছে। ইডি সেই খনির আর্থিক লেনদেন, কর সংক্রান্ত নথি এবং শ্রমিকদের বেতন সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখছে।

Advertisements

তদন্তকারীরা জানান, এই বালি পাচার চক্রের মাধ্যমে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকার অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়। সেই অর্থ বিভিন্ন নথি জালিয়াতির মাধ্যমে বৈধ আয়ের মতো দেখানো হয় এবং রিয়েল এস্টেট, ট্রান্সপোর্ট ও অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইডির অভিযান ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ালেও কোথাও বড় ধরনের গোলযোগের খবর মেলেনি। আসানসোল ও লালগড়ে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন ছিল রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনী।

উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বরও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ বালি খনন মামলা সংক্রান্ত একাধিক হানা চালিয়েছিল ইডি। কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, কল্যাণী ও বিধাননগরে সেই সময় মিলেছিল গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ব্যাংক লেনদেনের তথ্য।

কেন্দ্রীয় সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, “এবারের অভিযানে আরও বড় মাপের আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। রাজ্যের একাধিক ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে এই চক্র যুক্ত থাকতে পারে।” তদন্তকারীরা জানান, আগামী দিনে আরও এলাকায় অভিযান চালানো হতে পারে।