কলকাতা: জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে ফের নড়েচড়ে বসল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সোমবার ভোরে নদিয়ার চাকদহের পরারি গ্রামে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। লক্ষ্য-এক কাঠ মিস্ত্রি বিপ্লব সরকারের মাটির বাড়ি। আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ সেই টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরেই মিলেছে একাধিক সন্দেহজনক নথি। সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলছে তল্লাশি ও জেরা।
ইডি সূত্রে খবর, বিপ্লব সরকারের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক পাসপোর্ট ও নথিপত্র। সেগুলির উৎস, প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশযাত্রার রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদেরও একে একে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি আধিকারিকরা।
সাড়ে তিনশো ভুয়ো পাসপোর্টের আবেদন
এই তদন্তের সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল পাকিস্তানি নাগরিক আজাদ মল্লিককে। অভিযোগ, ভারতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সে পাসপোর্ট জালিয়াতি করেছিল। সেই মামলার ছায়া পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার সীমান্ত জুড়ে। ইতিমধ্যেই ধৃত হয়েছে ইন্দুভূষণ হালদার নামে এক অভিযুক্ত, যে আজাদের পাসপোর্ট নবীকরণে সরাসরি যুক্ত ছিল বলে দাবি ইডি-র।
তদন্তকারীদের হাতে আসা তথ্য বলছে, চাকদহের ইন্দুভূষণের সাইবার ক্যাফে থেকেই অন্তত সাড়ে তিনশো ভুয়ো পাসপোর্টের আবেদন করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই এবার বিপ্লব সরকারের নাম উঠে আসে।
খতিয়ে দেখা হচ্ছে নথি ED Fake Passport Raid Nadia
ইডি এখন খতিয়ে দেখছে, বিপ্লব সরকারের কোনও বাংলাদেশি সংযোগ রয়েছে কি না। তাঁর ব্যাংক লেনদেন, পাসপোর্টের ট্রাভেল হিস্ট্রি, এবং মোবাইল ডেটা খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ভাই বিপুল সরকার ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও নথি ও পরিচয়পত্র যাচাই চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বিপ্লব ও বিপুল পেশায় কাঠমিস্ত্রি হলেও তাঁদের ঘিরে এই হঠাৎ ইডি অভিযান গ্রামে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। ইডি আধিকারিকরা উদ্ধার হওয়া নথি বাইরে বসে একে একে যাচাই করছেন। বিকেল পর্যন্ত চলেছে তল্লাশি ও জেরা।
চাকদহের মতো সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জাল পাসপোর্ট চক্রের এমন নতুন পরত উন্মোচনে ইতিমধ্যেই তৎপরতা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।


