প্রাথমিকভাবে প্রেমঘটিত বিরোধের কথা শোনা গেলেও, পুলিশি তদন্তে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রেমঘটিত ত্রিকোণ সম্পর্ক নয়, সোনার ভাগ নিয়ে তুমুল বিবাদের জেরেই খুন হতে হয়েছে হজরত লস্ক নামে ওই যুবককে। দত্তপুকুরের যুবকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জম্মু থেকে ধৃত এক অভিযুক্ত জলিলের জেরায় এই তথ্য সামনে এসেছে বলে দাবি করেছে বারাসত পুলিশ।
সূত্রে জানা গিয়েছে, হজরত লস্কর একটি সক্রিয় ডাকাত দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই গোষ্ঠী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যেমন,হাওড়া, হুগলি, উত্তরপাড়া, বেলঘড়িয়া ও বরানগর এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল হজরত এবং তার সহযোগীরা। তবে হজরতের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে সন্দেহ ছিল যে, সে পুলিশের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছে। এই সন্দেহের পেছনে কারণ হলো, বেশ কয়েকটি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় হজরতের সাহায্যে পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। এই ঘটনার পর থেকেই ডাকাত দলের সদস্যদের সন্দেহের চোখে পড়ে হজরত।
তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার চূড়ান্ত পর্যায়ে চুরি করা ৪০ গ্রাম সোনার ভাগাভাগি নিয়ে হজরতের সঙ্গে জলিলের তীব্র ঝামেলা হয়। এরপরই, হজরতকে শায়েস্তা করার জন্য ডাকাত দলের সদস্যরা তাকে অপহরণ করে এবং পরে নৃশংসভাবে হত্যা করে তার দেহ মুন্ডুহীন অবস্থায় দত্তপুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশের ধারণা, হজরতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এবং সোনার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্কই এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল মোটিভ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জলিল ও ওবায়দুলের কাছ থেকে আরও তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, হজরতের হত্যাকাণ্ডের পেছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পুলিশ প্রশাসন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। তদন্তের অগ্রগতি এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে জোরালো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের আসল কারণ উন্মোচনে তদন্ত চলমান রয়েছে। পুলিশ আশা করছে, জলিল ও ওবায়দুলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শীঘ্রই এই মামলার সমাধান সম্ভব হবে।