দু-দিনের মাথায় বয়ান পরিবর্তন! মমতার কাছে ক্ষমা চাইলেন দুর্গাপুরে নির্যাতিতার বাবা

কলকাতা: সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে “ঔরঙ্গজেবের শাসন” চলছে বলে মন্তব্য করেছিলেন দুর্গাপুরের (Durgapur) মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতার বাবা। ঠিক দু-দিনের মাথাতেই করলেন বয়ান পরিবর্তন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “মাতৃসম” বলে উল্লেখ করে ক্ষমা চাইলেন নির্যাতিতার বাবা।

Advertisements

পাশাপাশি, দোষীদের শাস্তি দিতে তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে আর্জি জানালেন তিনি। বুধবার দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওড়িয়া ছাত্রীর বাবা বলেন, “আমি যদি কিছু ভুল বলে থাকি, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি তাঁর পায়ে পড়তেও রাজি। শুধু উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমার মেয়েকে বিচার দিক”।

বাংলায় ‘ঔরঙ্গজেবের শাসন চলছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন নির্যাতিতার বাবা

শুক্রবার দুর্গাপুরের (Durgapur) একটি মেডিক্যাল কলেজে পড়তে আসা দ্বিতীয় বর্ষের ওড়িয়া ছাত্রীকে কলেজের পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় দফায় দফায় মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহভাজনের তালিকায় থাকা নির্যাতিতার সহপাঠীকেও মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়।

অভয়া, আইন কলেজের পর দুর্গাপুরের ঘটনায় তোলপাড় সমগ্র দেশ। ফের বিজেপি সহ বাম-কংগ্রেসের নিশানায় পড়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। এই আবহে সোমবার নির্যাতিতার বাবা “বাংলায় ঔরঙ্গজেবের শাসন” চলছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। সেইসঙ্গে, মেয়েকে পশ্চিমবঙ্গে রাখতে চান না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Advertisements

চিকিৎসকদের পরামর্শ মোট মেয়ে একটু সুস্থ হলে তাঁকে ওড়িশায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি, ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা। কিন্তু তা রাজ্য-প্রশাসনের উপরেই নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

দুর্গাপুর গণধর্ষণ কান্ডে নয়া মোড়

১০ অক্টোবরের সন্ধ্যায় ডাক্তারি পড়ুয়ার গণধর্ষণ কান্ড মঙ্গলবার নয়া মোড় নেয়। ছাত্রীর সহপঠী তথা ষষ্ঠ অভিযুক্তকে গ্রেফতারির পর তদন্তকারীরা জানতে পারেন ছাত্রীকে একজন ধর্ষণ করেছে। মালদা জেলার বাসিন্দা ছাত্রীর সহপাঠীকে গ্রেফতারির পর রাজ্যে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

তদন্তকারীরা তার বক্তব্যে “স্পষ্ট অসঙ্গতি” খুঁজে পেয়েছেন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী গণধর্ষণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, “তদন্ত এবং মেডিকেল রিপোর্টে এখনও পর্যন্ত কেবল একজনের জড়িত থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। অন্যদের ভূমিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নির্যাতিতার বন্ধু সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়।” পাশাপাশি, দু-দিনের মাথায় নির্যাতিতার বাবার বয়ান পরিবর্তন নিয়েও প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করেছে।