মহাঅষ্টমীতে প্যান্ডেল হপিংয়ের আগে জেনে নিন বঙ্গের আবহাওয়া

কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর: শারদীয়া দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে বাংলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বড় ধরনের বৃষ্টির আশঙ্কা নেই (Weather Forecast)। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুসারে, আজ উত্তর বঙ্গে…

Weather Forecast

কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর: শারদীয়া দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে বাংলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বড় ধরনের বৃষ্টির আশঙ্কা নেই (Weather Forecast)। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুসারে, আজ উত্তর বঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে, যখন দক্ষিণ বঙ্গে মেঘলা আকাশের মধ্যে স্থানীয়ভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisements

তাপমাত্রা উত্তর বঙ্গে ২৮-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দক্ষিণ বঙ্গে ২৭-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। আর্দ্রতার মাত্রা উচ্চ থাকায় গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া অভিজ্ঞতা হবে, কিন্তু ঝোড়ো হাওয়া বা বজ্রপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই আবহাওয়া পুজোর উৎসবকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই আয়োজকদের সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

   

উত্তর বঙ্গের জেলাগুলোতে (যেমন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা) আজ দিনের বেলা মেঘলা আকাশ থাকবে এবং স্থানীয়ভাবে হালকা বৃষ্টি বা মৃদুমন্দ বাতাসের সম্ভাবনা রয়েছে। আইএমডি-র ২৯ সেপ্টেম্বরের রিপোর্ট অনুসারে, ২৯ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত (দিন ১) বেশিরভাগ জেলায় মেঘলা আকাশ এবং স্থানীয় বৃষ্টির পূর্বাভাস।

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০-৩২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৫-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। হিমালয়ান অঞ্চলে হালকা কুয়াশা দেখা দিতে পারে, যা পরিবহনকে প্রভাবিত করতে পারে। আইএমডি সতর্ক করে বলেছে, বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকায় বাইরে থাকা এড়িয়ে চলুন। উত্তর বঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় আর্দ্রতা ৮০-৯০ শতাংশ থাকবে, যা পুজোর প্যান্ডেলগুলোতে অস্বস্তিকর করে তুলতে পারে।

দক্ষিণ বঙ্গে (কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিম ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া) আজ মেঘলা আকাশের সঙ্গে স্থানীয় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আইএমডি-র সপ্তমী (৩০ সেপ্টেম্বর) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মেস্টলি ক্লাউডি স্কাই সঙ্গে লিটল রেইন, তাপমাত্রা ৩২°সি/২৭°সি এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫৮ শতাংশ।

কলকাতায় দিনের বেলা আংশিক সূর্যালোক দেখা দিতে পারে, কিন্তু বিকেলে বা সন্ধ্যায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি ঘূর্ণিপাক গঠিত হচ্ছে, যা ১ অক্টোবর থেকে প্রভাব বিস্তার করবে। তবে আজকের জন্য কোনো ঝড়ের সতর্কতা নেই। আর্দ্রতা ৭৫-৮৫ শতাংশ এবং বাতাসের বেগ ১০-১৫ কিমি/ঘণ্টা থাকবে।

পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি, যা ঝোড়ো হাওয়া (৩০-৪০ কিমি/ঘণ্টা) নিয়ে আসতে পারে।আইএমডি-র বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উত্তর অংশে ৩০ সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে একটি অবশিষ্ট ঘূর্ণিপাক উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতে পারে, যা ১ অক্টোবর থেকে লো প্রেশার এরিয়ায় রূপান্তরিত হবে।

এর ফলে অষ্টমী-নবমীতে (২-৩ অক্টোবর) দক্ষিণ বঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়েছে, বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। উত্তর বঙ্গে সপ্তমীতে স্বস্তি থাকলেও পরবর্তী দিনগুলোতে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়তে পারে। আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তমীতে বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকলেও আর্দ্রতার কারণে গরম অস্বস্তিকর হবে।

পুজোর প্যান্ডেল এবং প্রসেশনের জন্য আয়োজকদের ছাতা, রেইনকোট এবং জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।দুর্গাপুজোর এই সময়ে আবহাওয়া ভক্তদের উৎসাহে কোনো প্রভাব ফেলেনি। কলকাতার বেলঘরিয়া, হাওড়া ব্রিজ এবং দক্ষিণ বঙ্গের অন্যান্য প্যান্ডেলে হাজার হাজার ভক্ত মা দুর্গার দর্শন করছেন। উত্তর বঙ্গের শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে স্থানীয় উৎসব চলছে, যদিও মেঘলা আকাশের কারণে আলোকসজ্জা কিছুটা প্রভাবিত।

আগামী দুইটি সিজনের জন্য জামশেদপুরে থাকছেন প্রতীক

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের এই ঘূর্ণিপাক মনসুনের অবশিষ্টাংশ, যা অক্টোবরের শুরুতে দক্ষিণ বঙ্গে ১১টি জেলায় ভারী বৃষ্টি আনতে পারে। তবে সপ্তমীতে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় উৎসব অব্যাহত রাখা সম্ভব।আইএমডি-র পরামর্শ: বাইরে যাওয়ার সময় ছাতা সঙ্গে রাখুন, বজ্রপাত এড়াতে গাছতলায় না দাঁড়ানো এবং পথচারীদের সতর্কতা অবলম্বন করুন। দুর্গাপুজোর এই পবিত্র দিনে মা দুর্গার আশীর্বাদে আবহাওয়া অনুকূল থাকুক—এই প্রার্থনা সকলের। আরও আপডেটের জন্য আইএমডি অ্যাপ চেক করুন।