মমতাকে নিশানা করে গঙ্গাজল খাওয়ার নির্দেশ দিলীপের

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ফের মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে। কুম্ভ মেলা, আমডাঙ্গায় বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনা থেকে শুরু…

RSS Tried to Dissuade BJP’s Dilip Ghosh from Marriage, Sparks Buzz Across Political Circles

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ফের মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে। কুম্ভ মেলা, আমডাঙ্গায় বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনা থেকে শুরু করে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি— একাধিক বিষয়ে কটাক্ষ করলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, “১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ হচ্ছে”— এই তথ্য সঠিক নয়। তিনি বলেন, “প্রতি বছর পুণ্য স্নান হয়, গঙ্গাসাগর মেলাতেও আমরা এই স্নানের আয়োজন করি।” এই মন্তব্যের জবাবে দিলীপ ঘোষ কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “গঙ্গাস্নান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর নয়। যারা ধর্ম জানেন, তারাই এসব বিষয়ে কথা বলবেন। তার দলের সাংসদ, বিধায়ক সকলেই গঙ্গাস্নান ও ত্রিবেণী স্নান করেছেন এবং ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিয়েছেন। এখনও সময় আছে, উনিও গিয়ে স্নান করতে পারেন। না হলে ওখান থেকে গঙ্গাজল এনে তাঁদের ওপর ছিটিয়ে দেওয়া হোক। যাঁদের মুখ দিয়ে এমন ভুল কথা বেরোয়, তাঁদের মুখ গঙ্গাজলে শুদ্ধ করা দরকার।”

আমডাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের প্রসঙ্গ তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, দুষ্কৃতীরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরা প্রকাশ্যে বেআইনি কাজ করছে, বামেদের সঙ্গেও ব্যবসা করছে, বাইরে লোক পাঠাচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ ভুগছে।” দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভোটার সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। তিনি বলেন, “দিল্লির মতোই পশ্চিমবঙ্গে ভোটার সংখ্যা বাড়ানোর খেলা চলছে। সীমান্ত এলাকায় ভোটার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে, লাখ লাখ নতুন ভোটার তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এরা আসছে কোথা থেকে? এদের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড সব দেওয়া হচ্ছে, আর এরাই দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে।”

   

দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্পের অবস্থার সমালোচনা করেন এবং আসামের উন্নতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্প আজ দুর্দশাগ্রস্ত। কিন্তু আসামে চা শিল্প লাভজনক হয়ে উঠেছে। কিন্তু রাজ্যের সরকার কোনো উন্নয়ন করছে না, শুধু রাজনীতি করছে। বিজেপি চা শ্রমিকদের উন্নতির জন্য কাজ করছে এবং করবে।” উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নতি নিয়েও মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “গত ১০ বছরে উত্তর-পূর্ব ভারতের যে উন্নতি হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি। প্রতিটি রাজ্যে এখন হাই-স্পিড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন সেতু তৈরি হচ্ছে। উত্তর-পূর্বের মানুষ এখন মনে করছে তারা সত্যিই ভারতের অংশ। কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত পরিষেবা দিচ্ছে।”

দিলীপ ঘোষ দিল্লিতে সিএজি রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে কেজরিওয়াল সরকারকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, “দিল্লিতে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সব সত্যি বেরিয়ে আসছে। দেখুন, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। যারা জেলে আছে বা যারা এখনো বাইরে আছে, সবাই একদিন জেলে যাবে।” দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।