বাংলা ভাষা নিয়ে সম্প্রতি একটি বিতর্ক ফের সামনে এসেছে, যেখানে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ ও ‘ভারতের বাংলা ভাষা’ নিয়ে মন্তব্য করেছেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা ও রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন (Dilip Ghosh) সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।(Dilip Ghosh)
ঘটনার সূত্রপাত দিল্লি পুলিশের একটি বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে, যেখানে ‘বাংলাদেশি(Dilip Ghosh) ভাষা’ উল্লেখ করা হয়, যদিও তা আসলে বাংলা ভাষা। এই ভাষাগত বিভ্রান্তি নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল নেতারা কড়া সমালোচনা করেন দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এটা একেবারেই ‘বাংলা বিরোধী’ মনোভাবের প্রতিফলন।(Dilip Ghosh)
কিন্তু এই পরিস্থিতিতেই দিল্লি পুলিশের পাশেই দাঁড়ালেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “বিদেশে যখন রেডিও-টিভিতে বিভিন্ন ভাষায় অনুষ্ঠান হয়, তখন বাংলাদেশ থেকে যে ভাষায় সম্প্রচার হয়, তাকে তারা ‘বাংলা ভাষা’ বলেই চেনে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশের বাংলা ভাষার মধ্যে পার্থক্য আছে।” তাঁর আরও সংযোজন, “বাংলাদেশে ‘খাইতাসি’, ‘যাইতাসি’ এমন শব্দ ব্যবহার হয়, যেটা আমরা এখানে বলি না। দিল্লি পুলিশের মনে হয়েছে ওই ভাষা আলাদা, তাই সেটা বাংলাদেশি ভাষা বলেছে। এতে দোষের কী আছে?”
দিলীপবাবুর মতে, এই বিতর্কে বরং একটা ইতিবাচক দিক রয়েছে।(Dilip Ghosh) তাঁর কথায়, “এখন অন্তত পরিষ্কার হবে কোনটা বাংলাদেশের ভাষা আর কোনটা পশ্চিমবঙ্গের বাংলা। বহুদিন ধরেই এই বিভ্রান্তি ছিল। এবার সেটা মিটবে।”
এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের একাধিক নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন বাঙালি নেতা হয়ে কীভাবে বাংলা ভাষাকে ভাগ করার পক্ষে সওয়াল করেন দিলীপ ঘোষ? তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি পরিকল্পিত ভাবেই বাঙালির ভাষাগত আত্মপরিচয়কে আঘাত করছে।(Dilip Ghosh)
অন্যদিকে বিজেপির একাংশ আবার দিলীপ ঘোষের বক্তব্যকে সমর্থন করেছে। তাঁদের মতে, ভাষার স্বাতন্ত্র্য বোঝাতে এমন তথ্যভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন ছিল। বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ আবার এই বিতর্কের দায় চাপিয়েছেন তৃণমূলের ওপর। তাঁদের অভিযোগ, ভাষাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেই জনমত প্রভাবিত করতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল।(Dilip Ghosh)
ভাষাবিদ মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গের বাংলা এবং বাংলাদেশের বাংলা— উভয় ভাষাই বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্ত। উচ্চারণ, শব্দচয়ন, উপভাষা বা স্থানীয় প্রভাব থাকতেই পারে, কিন্তু তাতে ভাষার মূলে কোনও তফাত নেই। তাঁদের মতে, প্রশাসনিকভাবে বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভাষাকে ভাগ করা মানে জাতিসত্তা এবং সংস্কৃতির বিভাজন ঘটানো।(Dilip Ghosh)
সামগ্রিকভাবে, দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্য আবারও ভাষা ও পরিচয় নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে দিল— বাংলা ভাষা কি একক, নাকি রাজনৈতিক সীমারেখা তাকে আলাদা করে দিতে পারে? ভাষার বিভাজনের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও পরিচয়ের প্রশ্নে আগামী দিনে আরও উত্তপ্ত হতে পারে এই বিতর্ক।(Dilip Ghosh)