Dilip Ghosh: সীতার মত অগ্নিপরীক্ষা, ‘হারলেই কালাপানি পার’, দিলীপের ভবিষ্যত লিখবে বর্ধমান-দুর্গাপুরবাসী

প্রসেনজিৎ চৌধুরী, বর্ধমান: কথিত রামায়ণে দেবী সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে নিজের শুদ্ধতা প্রমাণ করতে হয়েছিল। ত্রেতা যুগের লিখিত চরিত্র রামকে নিয়ে কলি যুগের রাম রাজনীতির ‘অবতার’…

Photograph of Dilip Ghosh, a man with a serious expression, wearing a traditional attire, standing against a neutral background.

প্রসেনজিৎ চৌধুরী, বর্ধমান: কথিত রামায়ণে দেবী সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে নিজের শুদ্ধতা প্রমাণ করতে হয়েছিল। ত্রেতা যুগের লিখিত চরিত্র রামকে নিয়ে কলি যুগের রাম রাজনীতির ‘অবতার’ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) তাঁর রাজনৈতিক জীবনের টেনশনে। ভোট রাজনীতির চূড়ান্ত কথা হয় জয় নয় পরাজয়। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের ভোটারদের আঙুলেই নাচছে সাম্প্রতিক বাংলার সবথেকে চর্চিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দিলীপ ঘোষের ভবিষ্যত।

লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে নজরকাড়া আসন কোনটি? তালিকায় থাকছে ডায়মন্ডহারবার, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান-দুর্গাপুর। রাজ্যে তৃণমূল বনাম বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস জোটের ত্রিমুখী ভোট যুদ্ধে এই কেন্দ্রগুলি প্রার্থীদোর ভারত্বে তীব্র আলোচিত। আর দিলীপ সৌজন্যে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি দেশ জুড়েই আলোচিত।

পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ও শিল্পাঞ্চল ছড়িয়ে আছে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। পূর্বতন বর্ধমান জেলা ভেঙে দুটি জেলা হয়। দুই জেলার মধ্যে মিশে আছে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি। “এ রাজ্যে বিজেপিকে পায়ের তলায় শক্ত জমি তৈরি করে দিয়েছি” এমন দাবি বারবার করা দিলীপ ঘোষ বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে ভোট যুদ্ধে তথা নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষায় মরিয়া।

কী হবে সোমবার (১৩ মে)? রাজনৈতিক বিশ্লেষণে উঠে আসছে দিলীপের পরাজয় হলে তাঁর অস্তিত্বই বিলোপ হবে বঙ্গ রাজনীতি থেকে। তাঁকে চলে যেতে হতে পারে বঙ্গোপসাগর (কালাপানি) ঘেরা আন্দামান-নিকোবর দ্বীপে, যেখানে তিনি সংঘ পরিবারের হয়ে সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখতেন। নিজেকে কড়া ও রূঢ় বাক্য ও কটুক্তি করার মোড়কে আলোচনার কেন্দ্রে রাখা দিলীপ ঘোষ স্বাভাবিকভাবেই টেনশনে।

দিলীপ ঘোষকে ঘিরে রাজনৈতিক আলোচনা এমন- বিজেপির রাজ্য সম্পাদকের পদ আগেই গেছে। দলীয় সর্বভারতীয় সহসভাপতির পদটিও নেই। মেদিনীপুরের সাংসদ ছিলেন। সেই কেন্দ্রটিও দলেরই প্রতিপক্ষ শিবিরের কূটচালে ফস্কে গেছে। মেদিনীপুর থেকে বর্ধমান-দুর্গাপুরে পাঠানোর পিছনে অন্তর্ঘাত আছে। তবে দিলীপের সাফ জবাব আমি সংগঠন করা লোক। কেন্দ্র নিয়ে ডরাই না।

Advertisements

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রটি গত লোকসভা ভোটে বিজেপির দখলে চলে গেছিল। একেবারে চমক তুলে জয়ী হয়েছিলেন ভোটপাখি বলে চর্চিত সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। কেন্দ্রে অনুপস্থিতির বিতর্কে জড়িয়ে আলুওয়ালিয়া এবার আসানসোলের প্রার্থী। তিনিও রাজনৈতিক বাঁকের মুখে। আলুওয়ালিয়ার বদলে বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করে চমকে দেয় বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। আর একদা ‘লাল দুর্গ’ বলে চর্চিত এলাকাটিতে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী সুকৃতি ঘোষাল।

পুরো প্রচার পর্ব জুড়ে দিলীপ ঘোষ বনাম কীর্তি আজাদের বাকযুদ্ধ ও কটুক্তির মাঝে নীরব ছিলেন সুকৃতি ঘোষাল। এটিও রাজনৈতিক চর্চায় আসছে। তেমনই উঠে আসছে লোকসভাটির অধীন সবকটি বিধানসভায় তৃ়ণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য আর পঞ্চায়েত ও পুরভোটে বিজেপিকে পিছনে ফেলে বাম শিবিরের উত্থান। এই ভোট কাটাকাটির লডাইয়ে মিশে আছে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক ভবিষ্যত।