টনক নড়েছে! ‘অভিমানী’ দিলীপ ফের আসরে নামছেন?

ভোটে গো-হারা হেরে কী টনক নড়েছে বিজেপির!  অভিমানী দিলীপকে খুশি করতে কী বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করতে চলেছে বিজেপি!ভোটে ভরাডুবির পর রাজ্যে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন…

Dilip Ghosh addressing a political rally

ভোটে গো-হারা হেরে কী টনক নড়েছে বিজেপির!  অভিমানী দিলীপকে খুশি করতে কী বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করতে চলেছে বিজেপি!ভোটে ভরাডুবির পর রাজ্যে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তণ সভাপতি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের পর থেকেই ‘সাইলেন্ট মোডে’ চলে গেছেন তিনি। আর তাঁর এই আকস্মিক নীরবতাই জল্পনা বাড়াচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে। তবে কী এবার দলের নির্দেশেই এই নীরবতা পালন করছেন আসানসোলে বিজেপির পরাজিত পদপ্রার্থী। এখন এই ঢাক ঢাক গুর পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে জল্পনা।

২০১৯-এর লোকসভা ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্যে দলের প্রধান সেনাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর আগ্রাসী রাজনৈতিক কার্যকলাপে গত লোকসভাতেও ১৮ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। তারপর ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ‘আবকি বার ২০০ পার’বললেও মাত্র ৭৭ টি আসন নিয়েই থেমে গিয়েছিল গেরুয়া রথ। তখন দলের নেতৃত্বে রদবদল ঘটালে সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হয় দিলীপকে। সেই পদে বসেন সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু নতুন সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদের ওপর ভরসা করে রণনীতি তৈরি করেছিল বিজেপি। কিন্তু এই লোকসভা ভোটে তাঁর নেতৃত্বে মুখ থুবরে পড়ে বঙ্গ বিজেপি। ১৮টি আসন থেকে দলের নেমে দাঁড়ায় মাত্র ১২টিতে। এই অপ্রত্যাশিত ভরাডুবির ফলে দলের অন্দরেই শুরু হয় শোরগোল।

   

জেতা আসন হাতছাড়া হওয়ায় রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই ‘কাঠিবাজি’র তত্ত্ব তুলে ধরেন দলীপ ঘোষ। তিনি মুখ খুলতেই একে একে অগ্নিমিত্রা পাল, সৌমিত্র খাঁ, জগন্নাথ সরকারের মতো নেতারাও আঙুল তোলেন রাজ্যে নেতৃত্বের দিকে। তবে এই ইঙ্গিত যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তা বুঝতে কারওরই অসুবিধা হয়নি। তাই দলের অন্দরে চাপা ক্ষোভের মুখে পড়ে একরকম পাল্টা সাফাই গাইতে বাধ্য হন শুভেন্দু।

তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন,”নিজের খরচায় প্রার্থীদের প্রচারে যান তিনি। দলের কোনও সাংগঠনিক কাজে তিনি হস্তক্ষেপ করেন না। ভবিষ্যতেও করবেন না।” এই মন্তব্যের পর বিজেপির হতাশা ও ছন্নছাড়া পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল।

দিলীপ ঘোষ আরএসএসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ নেতা বলেই রাজনৈতিক মহলে পরিচিত। তাই তাঁর ক্ষোভ প্রশমনে গেরুয়া শিবির যে সক্রিয় হবে তা হয়ত বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি দিলীপ ঘোষের মতো সুদক্ষ সংগঠককে ফের ‘সক্রিয়’ করে তুলতে পারলে রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের জন্যও যথেষ্ঠ ভাল বলেই মত বিশ্লেষকদের। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনেই হয়ত কোনও একটি আসনে দাঁড়াতে পারেন প্রাক্তণ রাজ্য সভাপতি। আর এই জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে দিলীপের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। দলীয় সূত্রে খবর, এদিন বিধানসভায় যাবেন তিনি। সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে সোজা চলে যাবেন কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি লোকসভা ভোটে বিজেপির পদপ্রার্থী তাপস রায়ের সঙ্গেও সাক্ষাত্ করবেন। দিলীপ ঘোষের এই জনসংযোগ তাঁর প্রস্তুতির জমি তৈরির কৌশল বলেই মনে করছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল।

আসন্ন উপনির্বাচনে ইতিমধ্যে চারটি কেন্দ্রে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে শাসক দল তৃণমূল। মানিকতলা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক সাধন পান্ডের স্ত্রী সুপ্তি পান্ডে। আর এই কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের আওতাতেই রয়েছে মানিকতলা কেন্দ্রটিও…! যদিও মুরলীধর সেন স্ট্রিটের তরফে এখনও কোনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা না হয়েও বাড়ছে জল্পনা।