দিঘার জগন্নাথধামে প্রথমবার জন্মাষ্টমী, থাকছে বিশেষ আকর্ষণ

কাঁথি: আগামী শনিবার জন্মাষ্টমী। আর সেই বিশেষ দিনকে ঘিরে দিঘার জগন্নাথধামে (Digha Jagannath Temple) দেখা দিতে চলেছে এক নতুন ইতিহাস। এই প্রথমবার জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণে…

কাঁথি: আগামী শনিবার জন্মাষ্টমী। আর সেই বিশেষ দিনকে ঘিরে দিঘার জগন্নাথধামে (Digha Jagannath Temple) দেখা দিতে চলেছে এক নতুন ইতিহাস। এই প্রথমবার জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণে জন্মাষ্টমীর জমকালো আয়োজন হতে চলেছে। ভক্তদের ঢল নামার আশায় মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Advertisements

মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মাষ্টমীর দিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একটানা ভক্তিমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সাধারণত প্রতিদিন রাত সাড়ে ৮টার পর মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এবারের বিশেষ দিনে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকবে ভক্তদের জন্য। ভোর ৬টা থেকেই দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। দিনটি শুরু হবে জগন্নাথের মঙ্গলারতি দিয়ে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে নাম সংকীর্তন, ভক্তিমূলক গান এবং ধর্মীয় আলোচনা।

   

সন্ধ্যা নামতেই গোটা মন্দির প্রাঙ্গণ আলোকসজ্জায় সেজে উঠবে। রঙিন আলো ও ফুলের সাজে জগন্নাথ মন্দির হবে দর্শকদের জন্য এক অপূর্ব দৃশ্যপট। জন্মাষ্টমীর প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে মন্দির কর্তৃপক্ষ বিশেষ ‘কলস অভিষেক’-এর আয়োজন করেছে। জানা গিয়েছে, জন্মাষ্টমীর দিন শ্রীকৃষ্ণের স্নানের জল পূর্ণ কলসে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। ভক্তরা যদি সেই কলস সংগ্রহ করতে চান, তবে আগে থেকেই ৯৩৩৩০১২৩৪৫ নম্বরে ফোন করে বুকিং করতে পারবেন।

কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য রাধারমণ দাস বলেন, “প্রথমবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে জন্মাষ্টমী উদযাপন হবে। সকাল থেকে শুরু হবে মঙ্গলারতি ও কীর্তন। দুপুরে প্রসাদ বিতরণ হবে। আর রাত ১২টায় হবে শ্রীকৃষ্ণ জন্মোৎসব পুজো।” তিনি আরও জানান, এবারের আয়োজন শুধুমাত্র ভক্তিমূলক অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং স্থানীয় পরিবেশ সচেতনতার বার্তাও দেওয়া হবে।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে—উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ। শনিবার সকালে দিঘা জগন্নাথধামের পাশের নেচারপার্কে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সূচনা করবেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী। এই কর্মসূচির লক্ষ্য উপকূলীয় এলাকায় সবুজায়ন বৃদ্ধি ও পরিবেশ সংরক্ষণ।

দিঘা ও সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ীরাও এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আশাবাদী। পর্যটকদের ভিড়ে জমজমাট হবে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও স্থানীয় বাজার। অনেক পর্যটক ইতিমধ্যেই জন্মাষ্টমীর সপ্তাহান্তে দিঘা ভ্রমণের পরিকল্পনা করে ফেলেছেন। পর্যটন দফতরের আশা, এই ধরনের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় উৎসব ভবিষ্যতে দিঘার পর্যটন সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, এবারের জন্মাষ্টমী দিঘাবাসী ও ভক্তদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রথমবারের আয়োজন, নতুন উদ্যোগ, ভক্তদের ঢল, মনোমুগ্ধকর সাজসজ্জা এবং পরিবেশ সচেতনতার বার্তা—সব মিলিয়ে দিঘার জগন্নাথধামের জন্মাষ্টমী উদযাপন হতে চলেছে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।