দিঘায় অতিরিক্ত হোটেল ভাড়ায় ১ লক্ষ জরিমানা নিশ্চিত

মিলন পণ্ডা, দিঘা: রথযাত্রার আগে দিঘায় (Digha) পর্যটকদের স্বস্তি দিতে বড় পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে এবার হোটেল মালিকদের জন্য…

Digha Hotels Charging More Than Double the Rent? Tourist Assistant Booth Opens for Complaints"

মিলন পণ্ডা, দিঘা: রথযাত্রার আগে দিঘায় (Digha) পর্যটকদের স্বস্তি দিতে বড় পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে এবার হোটেল মালিকদের জন্য জারি হল সতর্কতা—হোটেল রেটলিস্টের বাইরে অতিরিক্ত টাকা নিলেই গুনতে হবে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সোমবার দিঘায় হওয়া প্রশাসনিক বৈঠকে।

কালোবাজারি রুখতে হোটেল রেট ফিক্সড:
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের (DSDA) অফিসে আয়োজিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী, অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌভিক চট্টোপাধ্যায়, নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়, DSDA-র প্রশাসক নীলাঞ্জন মন্ডল, এবং তিনটি হোটেল মালিক সংগঠন।

   

সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিটি হোটেলে রেটলিস্ট টাঙানো বাধ্যতামূলক। রেটলিস্টের নিচে থাকবে প্রশাসনের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ও হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার, যেখানে পর্যটকরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন।

কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি:
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী স্পষ্ট জানান, “যদি পর্যটকদের অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে হোটেল কর্তৃপক্ষকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। পাশাপাশি হোটেলের লাইসেন্স বাতিলের মতো পদক্ষেপও নেওয়া হতে পারে।”

DSDA-র তরফে যে কোনো সময় সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে হোটেলগুলিতে। রেটলিস্ট অমান্য হলেই নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা।

হোটেল সংগঠনের দাবি:
হোটেল মালিকদের তরফে প্রশাসনের কাছে কিছু দাবিও জানানো হয়েছে।

জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজটের কারণে দ্রুত রাস্তা সম্প্রসারণের দাবি ওঠে।

দিঘার একাধিক এলাকায় পথবাতি নেই—তাও দ্রুত বসানোর আবেদন জানানো হয়।

Advertisements

হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র জানান, “স্বচ্ছ এবং পর্যটক-বান্ধব দিঘার স্বপ্ন বাস্তবায়নে হোটেল মালিকরাও প্রশাসনের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।”

রেটলিস্ট সংরক্ষণ ও নজরদারি:
হোটেলগুলিকে রেটলিস্ট জমা দিতে হবে হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কাছে, যেখান থেকে তা জমা পড়বে DSDA-তে।
DSDA আগামী ১০ দিনের মধ্যে দিঘার সমস্ত হোটেলের তালিকা সংগ্রহ করবে।

বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে সেই সমস্ত হোটেল ও হোমস্টে গুলির ওপরে, যেগুলি সংগঠনের বাইরে থেকে ভাড়া বেশি নিচ্ছে কিংবা পর্যটন কর ফাঁকি দিচ্ছে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও কড়া নির্দেশ:
সোমবারের বৈঠকে স্বচ্ছ দিঘা গড়তে সব হোটেলকে বর্জ্য ঠিকঠাকভাবে নির্ধারিত গাড়িতে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবহেলা করলে সেই হোটেলের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জেলাশাসকের সরেজমিন পরিদর্শন:
বৈঠকের শেষে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী নিজে জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শনে যান। রথের যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন।

এই সিদ্ধান্তের ফলে দিঘায় হোটেল কালোবাজারি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়েছে। পর্যটকদের কাছে দিঘার ভাবমূর্তি ইতিবাচক রাখতে প্রশাসনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। স্বচ্ছ, নিয়মবদ্ধ ও পর্যটক-বান্ধব দিঘা গড়তেই প্রশাসনের এই শক্ত হাতে হাল ধরা—এ কথা মানছেন সকলেই।