শ্রাবণে গঙ্গাস্নানের জন্যও টাকা, তৃণমূল জমানায় চালু ‘জিজিয়া কর’!

শ্রাবণের সোমবার (Shravan Somvar rituals)। ভক্তদের গন্তব্য তারকেশ্বর। শেওড়াফুলিতে গঙ্গার ঘাটে স্নান। তারপর জল নিয়ে তারকেশ্বর মন্দির। যুগ যুগ ধরে এটাই বাংলার চেনা ছবি। হিন্দুদের…

Police Intelligence alarts over Bangladeshi infiltration ploy in Gangasagar festival

শ্রাবণের সোমবার (Shravan Somvar rituals)। ভক্তদের গন্তব্য তারকেশ্বর। শেওড়াফুলিতে গঙ্গার ঘাটে স্নান। তারপর জল নিয়ে তারকেশ্বর মন্দির। যুগ যুগ ধরে এটাই বাংলার চেনা ছবি। হিন্দুদের এই ধর্মাচারণে এবার টাকা দিতে হচ্ছে। শেওড়াফুলি ঘাটে স্নান করতে টাকা দিতে হচ্ছে। মাথা পিছু ১০ টাকা।

টাকা দেওয়ার কুপনসহ ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন শিবভক্ত সূর্য মালিক। তিনি লিখেছেন, “সব জায়গায় লুটছে,তারকেশ্বর যাচ্ছি জল ঢালতে। শেওড়াফুলি ঘাটে স্নান করে জল তুলতে প্রতিলোকের থেকে ১০ টাকা করে নিচ্ছে উন্নয়নের নাম করে। মা গঙ্গাকেও ছাড়ছে না!”

   

হুগলির মগরার বাসিন্দা সূর্য। গঙ্গাস্নানের জন্য টাকা দিয়ে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কটাক্ষ করেছেন রাজ্য সরকারকে। বলছেন, “এটাই তৃণমূল জমানায় উন্নয়নের নমুনা।” তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দিয়েছেন তিনি। রবিবার তাঁর ফেসবুক পোস্ট এখন ভাইরাল। অনেকেই বলছেন, তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গে কি জিজিয়া কর চালু হল?

জিজিয়া কর হল ইসলামিক রাষ্ট্রে ইসলামি আইনের অনুকূলে স্থায়ীভাবে বসবাসরত অমুসলিমদের জনপ্রতি বাৎসরিক ধার্যকৃত কর।ইসলামিক রাষ্ট্র কর্তৃক জিম্মি বা বিধর্মীদের সামরিক বাহিনীর যোগদান হতে নিবৃত্ত করে এবং জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও যুদ্ধবিগ্ৰহ অংশগ্রহণ থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য তাদের নিকট থেকে জিম্মিদের আর্থিক সচ্ছলতা বিবেচনা করে, ধার্যকৃত নিরাপত্তামূলক সামরিক করকে জিজিয়া বলে।

Advertisements

উসমানীয় তুরস্কে ১৯শ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত জিজিয়া বলবৎ ছিল। মুসলমানদের বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বিভাগে যোগদান করতে হতো বলে তার পরিবর্তে অমুসলমানদের ওপর একটি কর ধার্য করা হয়। কিন্তু সকল ধর্মের নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক পেশা প্রবর্তিত হওয়ার পর এই করেরও বিলোপ হয়। মধ্য যুগে পৃথিবীর অন্যান্য মুসলিম শাসিত দেশেও অমুলমানদের ওপর জিজিয়া কর ধার্য করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে আকবর এটা রহিত করেন, কিন্তু সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে এটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়।

শেওড়াফুলি ঘাট বৈদ্যবাটি পুরসভা এলাকায়। কয়েক মাস আগে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় বৈদ্যবাটি। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোষণের অভিযোগ ওঠে। এবার শ্রাবণে মহাদেবের উপাসনায় ভক্তদের থেকে টাকা আদায়। এ নিয়েই জোর বিতর্ক।