শপিং মলের পরিকল্পনায় ইচ্ছাকৃত অগ্নিকান্ড, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ স্থানীয়দের

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী খিদিরপুর বাজারে গত রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের (deliberate-fire) ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, এই…

deliberate-fire in khidirpur

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী খিদিরপুর বাজারে গত রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের (deliberate-fire) ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, এই আগুন কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং বাজারের জায়গায় শপিং মল নির্মাণের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে।

বাজারের দোকানিরা দাবি করেছেন, (deliberate-fire) সরকারের পরিকল্পনা হলো এই বাজারকে নেচার পার্কে স্থানান্তরিত করা, যাতে এই জমিতে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স তৈরি করা যায়। আরও গুরুতর অভিযোগ, যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় এই বাজার রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছিলেন, তিনিই এখন এটি উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছেন।

   

অগ্নিকাণ্ডের বিবরণ

গত রাত ১১টা নাগাদ খিদিরপুরের ব্রিগেডিয়ার রোডে অবস্থিত (deliberate-fire) এই বাজারে আগুন লাগে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কয়েক মিনিটের মধ্যে বাজারের বেশিরভাগ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দমকল বাহিনীর ১৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও আগুন (deliberate-fire) নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে। প্রাথমিক অনুমানে, বাজারের প্রায় ২০০টি দোকান সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে শতাধিক ব্যবসায়ী সর্বস্বান্ত হয়েছেন। কোনো প্রাণহানির খবর না পাওয়া গেলেও, কয়েকজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ (deliberate-fire)

খিদিরপুরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা এই অগ্নিকাণ্ডকে (deliberate-fire) একটি “পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র” বলে অভিহিত করেছেন। স্থানীয় দোকানিরা অভিযোগ করেছেন “এই বাজারে আগুন লাগার পিছনে বড় বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের হাত রয়েছে। তাঁরা এই জায়গায় শপিং মল বানাতে চান।” বাজারের একজন পুরনো দোকানি শেখ আলি বলেন, “আমরা শুনেছি, সরকার এই বাজার নেচার পার্কে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু সত্যি কথা হলো, এই জমিতে বড় মল বানানোর পরিকল্পনা চলছে।”

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেছেন, বাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। বাজারে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না, এবং দমকল বাহিনীর গাড়ি ঢোকার জন্য পর্যাপ্ত রাস্তাও ছিল না। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ল এবং কেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হলো না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

খিদিরপুর বাজারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে তৎকালীন সিপিএম সরকার এই বাজার উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছিল। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী হিসেবে, বাজারের ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁর আন্দোলনের ফলে বাজারটি রক্ষা পায়। কিন্তু এখন স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, তিনিই এই বাজার তুলে দিয়ে বাণিজ্যিক প্রকল্পের পথ প্রশস্ত করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা (deliberate-fire) আর ও বলেন , “মমতা দিদি একসময় আমাদের জন্য লড়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি কেন চুপ? এই বাজার ধ্বংস করে শপিং মল বানানো হলে আমরা কোথায় যাব?” বাজারের ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই এই পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, পশ্চিমবঙ্গের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, (deliberate-fire) অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা ফরেনসিক দল পাঠিয়েছি। আগুনের উৎস এবং কারণ জানতে তদন্ত চলছে।” তবে, শপিং মল নির্মাণের অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

Advertisements

কলকাতা পুলিশের একটি দলও ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লাগার সম্ভাবনার কথা বলা হলেও, স্থানীয়দের অভিযোগের পর তদন্তে ষড়যন্ত্রের কোণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি

খিদিরপুর বাজারে প্রায় ৫০০টি দোকান রয়েছে, যেখানে শাকসবজি, মাছ, মাংস, কাপড় এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি হয়। এই বাজার শুধু খিদিরপুরের নয়, পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের জীবিকা ও জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাজারের ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, তাঁদের নেচার পার্কে স্থানান্তরের পরিকল্পনা তাঁদের ব্যবসার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। একজন ব্যবসায়ী বলেন, “নেচার পার্কে গেলে আমাদের গ্রাহক কমে যাবে। এখানকার জায়গায় মল বানালে আমরা কোথায় যাব?”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং বামফ্রন্ট এই অগ্নিকাণ্ডের পিছনে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “খিদিরপুর বাজারের এই ঘটনা কলকাতার ঐতিহ্য ধ্বংসের একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ (deliberate-fire)। তৃণমূল সরকার রিয়েল এস্টেট মাফিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।”

৬০-এর পরে শুরু করুন এই ৫টি কম খরচের ব্যবসা

ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ

এই অগ্নিকাণ্ডের (deliberate-fire) পর খিদিরপুর বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ এবং বাজার পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, যদি বাজার স্থানান্তর করা হয়, তবে তাঁদের জীবিকা সংকটে পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দারাও বাজারের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন।

খিদিরপুর বাজারে অগ্নিকাণ্ড (deliberate-fire) কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি কলকাতার ঐতিহ্য ও সাধারণ মানুষের জীবিকার উপর হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে শপিং মল নির্মাণের বড় পরিকল্পনা রয়েছে। তৃণমূল সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতা এই সন্দেহকে আরও গাঢ় করছে। তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন এবং ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন না হলে এই ঘটনা বৃহত্তর আন্দোলনের সূত্রপাত করতে পারে। খিদিরপুর বাজারের ভবিষ্যৎ এখন কলকাতার রাজনীতি ও প্রশাসনের হাতে।