২১ এ জুলাইয়ের শহীদ মঞ্চ থেকে বিপুল জন জোয়ারের উদ্দেশে একটি লম্বা চওড়া ভাষণ দিয়েছিলেন (Daribhit)। সেই ভাষণে মমতা বার বার উচ্চারণ করেছেন ভিন রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থার কথা। তিনি বলেন বাংলা বললেই বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলিতে বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে আটক করা হচ্ছে। সমগ্র বাঙালী জাতিকে তিনি বলেছেন আবার এই বাংলায় ভাষা আন্দোলন হবে।
শুধু বাংলা নয় মমতা গলা ফাটিয়েছেন অসমের বাঙালিদের জন্য। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কে তিনি বলেছিলেন বাংলার ব্যাপারে নাক না গলাতে। তিনি আরও বলেন দরকার হলে তিনি অসমের বাঙালিদের হয়েও রাস্তায় নামবেন।
পারলে তাকে যেন আটক করা হয়। কিন্তু এসবের মধ্যে একটি ঘটনা তিনি উল্লেখ করেননি বা বলা ভাল উপেক্ষা করেছেন যা হল ২০১৮ সালে উত্তর দিনাজপুরের দাঁড়িভিট হাই স্কুলে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনা।
দাঁড়িভিট হাই স্কুলে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল উর্দু শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে। বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্ররা বিক্ষোভ করেছিলেন ‘উর্দু নয় চাই বাংলা শিক্ষক’। এই বিক্ষোভ, প্রতিবাদ একসময় হিংসায় রূপ নেয়। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং তার সঙ্গে চলে গুলি।
পুলিশের গুলিতে সেদিন মারা গিয়েছিলেন ওই হাই স্কুলেরই দুজন প্রাক্তনী তাপস বর্মন এবং রাজেশ সরকার। মমতার বাংলা ও বাঙালি সহমর্মিতার এই কর্মকান্ডের মধ্যে সমালোচককুলের প্রশ্ন, মমতা কেন সযত্নে এড়িয়ে গেলেন দাড়িভিটের এই মর্মান্তিক ঘটনা। সেদিনের শহীদ মঞ্চ থেকে কেন শোনা গেল না তার কণ্ঠে এই দুর্ঘটনার কোনো উল্লেখ।
তার কারণ কি সেদিন মমতার পরিচালিত পুলিশ এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে? নাকি শুধুই বিরোধী দলের দোষ ধরে নিজের দলের কর্মকান্ড কে আড়াল করা? সমালোচকদের আরও প্রশ্ন, সেদিন যে দুজন প্রাক্তনী বাংলা ভাষার জন্য পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন তা কি ভাষা আন্দোলন ছিল না?
তারা এও বলছেন যে আজ বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রতিবাদ করছেন ভাষা আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন কিন্তু যখন তৃণমূল সরকারের পুলিশের গুলিতে ভাষা আন্দোলনকারীর প্রাণ যায় তা নিয়ে কেন মুখে কুলুপ এঁটেছেন মমতা। এই বিষয়ে মতামত দিয়েছেন বাংলাপক্ষের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক মাইতি।
তিনি বলেছেন দাঁড়িভিট নিয়ে সবচেয়ে বেশি যারা গলা ফাটায় তারা বিজেপি। কিন্তু সরকারি তথ্য বলেছে বিজেপি সরকারের আমলেই উর্দু ভাষার সবচেয়ে বেশি বাজেট। বাংলার জন্য তারা এক টাকাও বরাদ্দ করেনি।
কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজে! কয়েক বছরে কোটিপতি বিবেকানন্দ
বাংলাপক্ষ ও প্রশ্ন তুলেছে তাহলে কি বিজেপির উর্দু বিরোধিতা পুরোটাই মেকি আর বাংলা বিরোধিতা তা আসল। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা আন্দোলন কি শুধুই রাজনৈতিক কৌশল? নিজের সরকারের দোষ ঢাকা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খেলে চলা ভিক্টিম কার্ড আজ কি মানুষ কে বিচলিত করবে কি তা বলবে সময়।