বর্ষার বর্ধমান, দামোদরে ডলফিনের নাচ!

প্রবল বর্ষণে ‘শস্য গোলা’ বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ কৃষি জমি জলের তলায়। অতি বৃষ্টির তোড়ে দামোদর নদ-সহ অন্যান্য নদীতে বেড়েছে জল। ঘন ঘন মেঘ…

বর্ষার বর্ধমান, দামোদরে ডলফিনের নাচ!

প্রবল বর্ষণে ‘শস্য গোলা’ বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ কৃষি জমি জলের তলায়। অতি বৃষ্টির তোড়ে দামোদর নদ-সহ অন্যান্য নদীতে বেড়েছে জল। ঘন ঘন মেঘ গর্জন। রাতভর বৃষ্টি শেষে সকালে ভরা দামোদরে ডলফিন দেখে চমকে গেলেন অনেকে। তারপর শুরু ডলফিন আর মানুষে দড়ি টানাটানি (Damodar river dolphin sighting)।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের সাদিপুর। এখানে দামোদরে মাছ ধরার জালে আটকে পড়ে ডলফিন। যদিও এই ধরনের প্রাণী গ্রামীণ এলাকায় শুশুক নামে পরিচিত।

   

জালে আটকে পড়ে ডলফিন জলের মধ্যে এঁকে বেঁকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। সেই দৃশ্য দেখতে নদীর ধারে উৎসাহী মানুষের ভিড় জমে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত মাঝির মাছ ধরার জালে জড়িয়ে গেছিল সেই ডলফিন। তাকে ফের ভাসিয়ে দিতে চান এলাকাবাসী। আর জলফিনটি নৌকার আশ পাশ দিয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চায়। বেশ কিছুক্ষণ ডলফিন ও মানুষের টানাটানি চলে। পরে জাল ছাড়িয়ে ডলফিনকে দামোদরের গভীর জলে পাঠিয়ে দেন এলাকাবাসী। জানা গেছে প্রানীটির ওজন প্রায় চল্লিশ কেজি।

Advertisements

শুশুক হলো ডলফিন প্রজাতির প্রাণী। এটি ‘Ganges River Dolphin’ নামে প্রাণী বিজ্ঞানে উল্লেখিত বিপন্ন জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণী মূলত গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও বাংনাদেশের মেঘনা নদী অববাহিকায় পাওয়া যায়। দৃষ্টিশক্তি খুবই দুর্বল, তাই শিকার ধরতে এরা ডলফিনের মতো শব্দ তরঙ্গ ছড়িয়ে দিয়ে শিকার শনাক্ত করে। এদের শরীর ধূসর বা বাদামি রঙের, লম্বা চোঙের মতো মুখ ও ধারালো দাঁত থাকে।

প্রাপ্তবয়স্ক শুশুকের দৈর্ঘ্য ৭-৮ ফুট পর্যন্ত হতে পারে এবং ওজন ৭০-৯০ কেজি পর্যন্ত হয়। এরা সাধারণত একাকী বা জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। ছোট মাছ, চিংড়ি, জলজ পোকামাকড় ইত্যাদি খায়। শুশুক সাধারণত নদীর গভীর অংশ, যেখানে পানির প্রবাহ তুলনামূলক কম, সেখানে বাস করে। তবে বর্তমানে নদীর দুষণ, বাঁধ নির্মাণ ও জলজ পরিবেশের ধ্বংসের কারণে এদের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
শুশুক “নদীর ডলফিন” বলেও চিহ্নিত। এটি জলদূষণ ও পরিবেশগত পরিবর্তনের একটি সূচকপ্রাণী হিসেবেও বিবেচিত।