আগামীকাল শেষ ডিএর সময়সীমা, সরকারের পদক্ষেপ কি ?

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের (Government) সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) প্রদানের বিজ্ঞপ্তি জারি করার শেষ দিন আগামীকাল, ২৭…

Government decision on DA

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের (Government) সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) প্রদানের বিজ্ঞপ্তি জারি করার শেষ দিন আগামীকাল, ২৭ জুন, ২০২৫। তবে, আগামীকাল পুরীর জগন্নাথ রথযাত্রা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে, ডিএ বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য আজ, ২৬ জুন, শেষ কার্যকর দিন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

যদি আজ এই বিজ্ঞপ্তি জারি না হয়, তবে সোমবার, ৩০ জুন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার জন্য রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি হতে পারে। এই পরিস্থিতি রাজ্যের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে তীব্র জল্পনার সৃষ্টি করেছে।

   

ডিএ ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্ট দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি (Government) কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ প্রদানের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়ে আসছে। সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা কেন্দ্রীয় সরকারের হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রদানের দাবিতে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট ২৭ জুন, ২০২৫-এর মধ্যে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য রাজ্য সরকারকে সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ ছিল ২৫% মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে। এই সময়সীমা শেষ হতে চলেছে আগামী কাল এবং সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো এই বিষয়ে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।

রথযাত্রার ছুটি ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ (Government)

পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতি বছর রথযাত্রার দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করে, এবং ২০২৫ সালেও এই ঐতিহ্য অব্যাহত রয়েছে। আগামীকাল, ২৭ জুন, পুরীর এবং দিঘার জগন্নাথ রথযাত্রা উপলক্ষে রাজ্যের সমস্ত সরকারি অফিস, আদালত, এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ফলে, ডিএ বিজ্ঞপ্তি (Government) জারি করার জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি অফিসগুলো আজ স্বাভাবিকভাবে কাজ করলেও, এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও প্রকাশিত হয়নি। এই পরিস্থিতি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ এবং প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছে।

রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও ডিএ বিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা পাওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, নবান্নে (Government) এই বিষয়ে তৎপরতা চলছে, তবে আর্থিক সংকট এবং অন্যান্য প্রশাসনিক জটিলতার কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট কখনো বলেনি ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। সর্বোপরি কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক বঞ্চনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

রাজ্য সরকার বারবার দাবি করেছে যে, তারা সরকারি কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, বকেয়া ডিএ প্রদানের বিষয়ে কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা আর্থিকভাবে চ্যালেঞ্জিং বলে সরকার মনে করে। এই পরিস্থিতিতে, আজকের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি না হলে, সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে জবাবদিহি করতে হতে পারে।

ঐতিহাসিক মুহূর্ত, প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ ঘাঁটিতে পা রাখলেন শুভাংশু

Advertisements

আদালত অবমাননার আশঙ্কা

সুপ্রিম কোর্টের (Government) নির্দেশ অমান্য করলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি হতে পারে। এই নোটিশ জারি হলে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে। সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে আইনি পথে এগোতে প্রস্তুত।

একটি সংগঠনের নেতা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ডিএ-র জন্য লড়াই করছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করা হলে, আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।” এই পরিস্থিতি রাজ্য সরকারের জন্য রাজনৈতিকভাবেও অস্বস্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে যখন সরকারি কর্মচারীদের একটি বড় অংশ এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ। অন্য দিকে রাজ্য ও তাদের নিজেদের সপক্ষে যুক্তি খাড়া করে আদালত মুখো হবে তা বলাই বাহুল্য।

জনমত ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সমাজ মাধ্যমের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “ডিএ নিয়ে রাজ্যকে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের সময়সীমা শেষ হতে চলেছে।” এই পোস্টটি জনমনে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে বিজেপি এবং সিপিআই(এম), এই বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছে।

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের প্রতি উদাসীন। তারা আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানছে না।” তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্ররা জানিয়েছেন, সরকার এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং শীঘ্রই সমাধান হবে।

ডিএ প্রদানের (Government) শেষ সময়সীমা এবং রথযাত্রার সরকারি ছুটির কারণে রাজ্য সরকার একটি চাপের মুখে রয়েছে। আজকের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি না হলে, সোমবার আদালত অবমাননার নোটিশ জারির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের (Government) জন্ম দিয়েছে। রাজ্য সরকার কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলে, তা আগামী দিনে রাজ্যের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।