বঙ্গোপসাগরে ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘মোন্থা’। আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সন্ধে বা রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা এবং তামিলনাড়ুর উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে, উত্তাল বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রের ঢেউ বেড়েছে কয়েকগুণ।
‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়
মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় ‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। বর্তমানে এটি অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম থেকে প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে এবং ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তর পশ্চিম অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে। সন্ধে বা রাতের মধ্যে মছলিপত্তনম ও কলিঙ্গপত্তনমের মাঝামাঝি অঞ্চলে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা।
অন্ধ্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা Cyclonic Storm Montha Andhra Pradesh
অন্ধ্রপ্রদেশে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। রাজ্যের ১৯টি জেলায় লাল সতর্কতা, তিন জেলায় কমলা এবং চার জেলায় হলুদ সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রশাসন জরুরি প্রস্তুতি নিচ্ছে—নিচু এলাকাগুলিতে বসবাসকারী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু জানিয়েছেন, প্রায় ৩,৭৭৮টি গ্রামে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের পাশাপাশি ওড়িশার দক্ষিণ ভাগের আটটি জেলায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভারী বৃষ্টির দাপট। গঞ্জাম, গজপতি, কোরাপুট, রায়গড়া এবং মালাকানগিরি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যেখানে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। পুরী-সহ আরও ১১টি জেলায় কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে।
রাজ্যে কেথায় বৃষ্টি
পশ্চিমবঙ্গেও মিলেছে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব। উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলাতেও দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দর থেকে একাধিক উড়ান বাতিল করা হয়েছে। সমুদ্র উপকূলে মৎস্যজীবীদের সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা যেন কেউ গভীর সমুদ্রে না যান।
আবহবিদদের মতে, ‘মন্থা’ আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। ইতিমধ্যেই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।


