‘দানা’-র প্রভাবে বাড়ছে হাওয়ার গতিবেগ, বাংলা থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়

সিভিয়ার সাইক্লোনিক (Cyclone) ঝড় ‘দানা’ (“DANA”) উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে গত ৬ ঘণ্টায় উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে ১৫ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। আজ ২৪ অক্টোবরের IST অনুযায়ী, এটি ১৮.৩ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৩ পূর্ব দ্রাঘিমার নিকটবর্তী, ২৫০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে পারাদীপ (ওড়িশা), ৩১০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে ধামরা (ওড়িশা) এবং ৩৫০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে সাগর দ্বীপ (পশ্চিমবঙ্গ) অবস্থান করছে।

Advertisements

Cyclone DANA

ঝড়ের গতি ও পূর্বাভাসঃ
‘দানা’ ঝড়টি খুব শীঘ্রই উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৪ থেকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যরাতে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের মধ্যে, পুরী এবং সাগর দ্বীপের কাছে, ভীতরকনিকা ও ধামরার নিকটবর্তী স্থানগুলোতে প্রবাহিত হবে। এ সময় ঝড়ের গতিবেগ ১০০-১১০ কিমি প্রতি ঘন্টা এবং দমকা হাওয়া ১২০ কিমি প্রতি ঘন্টা হতে পারে।

বাতাসের সতর্কতাঃ
বঙ্গোপসাগরের পূর্বকেন্দ্রীয় অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৯০-১০০ কিমি প্রতি ঘন্টা এবং দমকা হাওয়া ১১০ কিমি প্রতি ঘন্টা হতে পারে। এটি ২৪ অক্টোবর সকাল থেকে বৃদ্ধি পাবে এবং পরে কমতে পারে। দক্ষিণ বঙ্গের জেলা গুলিতে (যেমন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা) ৬০-৭০ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিবেগের বাতাস বইতে পারে, যা ১০০-১১০ কিমি প্রতি ঘন্টা গতি ধারণ করতে পারে।

বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসঃ
২৪ অক্টোবর, ২০২৪: পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় স্থানীয়ভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত (৭-২০ সেমি) হতে পারে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রাম জেলায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
২৫ অক্টোবর, ২০২৪: দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisements

সমুদ্রের অবস্থানঃ
বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলে সমুদ্রের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ থাকতে পারে, যা ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে উন্নতি হতে শুরু করবে। এই সময়ে মাছ ধরার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে।

স্টর্ম সার্জ সতর্কতাঃ
স্টর্ম সার্জের কারণে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১.০ থেকে ২.০ মিটার উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস ঘটতে পারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও ০.৫ থেকে ১.০ মিটার উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রত্যাশিত প্রভাবঃ
বাড়ি ও অবকাঠামোর ক্ষতি: কাঁচা ঘরবাড়ির বড় ধরনের ক্ষতি হবে, ছাঁদ উড়ে যেতে পারে এবং তাত্ক্ষণিক জলোচ্ছ্বাসের কারণে ক্ষতি বাড়তে পারে।
জল জমা: স্থানীয়ভাবে জল জমে যাবে, বিশেষ করে শহর এলাকায়, যেখানে রাস্তাঘাটে জল জমার কারণে যানবাহনের চলাচল বিঘ্নিত হবে।
বাতাসের কারণে ক্ষতি: গাছপালার ক্ষতি হতে পারে, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ লাইনের সমস্যা হতে পারে।
কৃষিতে ক্ষতি: কিছু অঞ্চলে বৃষ্টির কারণে চাষাবাদে ক্ষতি হতে পারে, যা কৃষকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হবে।

পরামর্শঃ
মৎস্য কার্যক্রম স্থগিত: ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৎস্য কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।
নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর: উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সতর্কতা বজায় রাখা: প্রত্যেকের উচিত ঘরে থাকা এবং বাড়ির আশেপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সতর্ক নজর রাখা।
সকলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে যে তারা নিরাপদে থাকুন এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলুন। প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এবং আবহাওয়ার দপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।