কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ এখন এমন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে আইন থাকলেও তা সঠিকভাবে কার্যকর হয় না৷ রাজ্যকে বিধে এমনই মন্তব্য করলেন গভর্নর সিভি আনন্দ বোস। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাজ্যে ক্রমবর্ধমান হিংসা, অপরাধ ও নারীর প্রতি হিংসার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগের৷ এই রাজ্যে নারীরা নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারছেন না।
গত সপ্তাহে রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যান। পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেন সাংসদ খগেন মুর্মু’র সঙ্গে৷ যিনি সম্প্রতি ওই অঞ্চলে ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে আক্রান্ত হন। এরপর সরাসরি দুর্গাপুরে গিয়ে দেখা করেন ওড়িশার জলেশ্বরের ২৩ বছরের নির্যাতিতা মেডিক্যাল ছাত্রী’র সঙ্গে৷
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গভর্নরের মন্তব্য
রাজ্যপাল বলেন, “এখানে একের পর এক ঘটনা ঘটছে, যা মানুষের, বিশেষ করে নারীদের, নিরাপত্তাবোধ ক্ষুণ্ণ করছে। সম্প্রতি মেডিক্যাল ছাত্রীকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ আমি তার সঙ্গে ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। যা হয়েছে তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। বাংলা এখন এমন সমাজে পরিণত হয়েছে যেখানে নারীরা নিরাপদ বোধ করছেন না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যে কোনো সমাজের শক্তি মাপা হয় নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদার মাধ্যমে। শাস্ত্র আমাদের শেখায় নারীর সম্মান করতে হবে। এমন অসহায় পরিস্থিতি চলতে পারে না। রাজ্যের প্রয়োজন নবজাগরণের।”
খগেন মুর্মু ও হিংসার সংস্কৃতি CV Ananda Bose Bengal Law Order
“খগেন মুর্মু একজন উপজাতি নেতা এবং তার সঙ্গে যা ঘটেছে তা চরমভাবে শোকজনক। আমাদের এই হিংসার সংস্কৃতির অবসান করতে হবে। এখানে গণতন্ত্রকে মবোক্রেসি দ্বারা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে।” রাজ্যপাল জানান, তিনি এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, যা গোপনীয়।
দুর্গাপুর ধর্ষণ মামলার প্রসঙ্গে
দুর্গাপুর ধর্ষণ-কাণ্ডেও মৌখিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, লিখিত রিপোর্ট শীঘ্রই জমা দেওয়া হবে বলে জানান সিভি আনন্দ বোস৷ তিনি বলেন, ‘‘নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করা এবং তাঁর কথা শোনা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। আমি তাকে আশ্বস্ত করেছি যে, বিচার নিশ্চিত করতে যা সম্ভব সবকিছু করা হবে।”