বিহার থেকে বাংলার জেলে গ্যাংস্টার সুবোধ সিং

মণীশ শুক্লা থেকে রাজু ঝা খুন। পরপর সোনার দোকানে লুট। তোলাবাজি-হুমকি। শুটআউট। জেলে বসেই বাংলায় অপারেশন বিহারের গ্যাংস্টারের। পড়শি রাজ্য থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হয়…

সুবোধ সিং

মণীশ শুক্লা থেকে রাজু ঝা খুন। পরপর সোনার দোকানে লুট। তোলাবাজি-হুমকি। শুটআউট। জেলে বসেই বাংলায় অপারেশন বিহারের গ্যাংস্টারের। পড়শি রাজ্য থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হয় বাংলায়।

নামেই জেল। অপহরণ সিনেমায় জেলের মধ্যেই ভরপুর খাতিরযত্নের ব্যবস্থা ছিল অজয় শাস্ত্রীর। ঠিক তেমনই বিহারের বেউর জেল যেন গ্যাংস্টার সুবোধের কাছে ছিল অপারাধের মুক্তাঞ্চল। জেলের ২২ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে বসেই দিনের পর দিন চালিয়ে গিয়েছে অপারেশন সুবোধ সিং।সোনার দোকানে ডাকাতি থেকে দেশের নানা প্রান্তে ব্যবসায়ীদের ফোন করে হুমকি, শ্যুটআউট বাদ যায়নি কিছুই।

   

বাংলায় একাধিক অপরাধের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে সুবোধের (Subodh Singh)। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police)  চাইছিল সুবোধকে নিজেদের হেফাজতে পেতে। এবার ২০২২ সালে রানিগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি ও অপরণের চেষ্টার মামলায় ট্রানজিট রিমান্ডে সুবোধ সিংকে বাংলায় নিয়ে এসেছে সিআইডি।

বাংলায় তালিবানি শাসনের ছবি! প্রেমের সম্পর্কে চোপড়ায় মহিলাকে ভয়াবহ প্রহার

এক সময় নিজে শার্প শুটার ছিল সুবোধ। ধীরে ধীরে নিজের গ্যাং গড়ে তোলে। বিহারে অপরাধের সাম্রাজ্য কায়েম করে হাত বাড়ায় ভিনরাজ্য। ভিনরাজ্যের স্থানীয় দুষ্কৃতীরা খবর দিত। তার ভিত্তিতে অপারেশনে নামত সুবোধের গ্যাং।

বিহার ছাড়াও সুবোধের গ্যাং বিশেষভাবে সত্রিয় হয়ে ছিল পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ সহ নানা রাজ্যে। অভিযোগ, এসব রাজ্যে সোনার দোকানে ডাকাতির বেশিরভাগেরই মাস্টার মাইন্ড বিহারের এই মাফিয়া। এর জন্য অপরাধের জগতে অনেকেই ‘জুয়েল থিফ’বলে ডাকে। গত কয়েক বছরে একের পর এক অপরাধ। ২০১৮ থেকে বিহারের বেউর জেলবন্দি সুবোধ সিং। কিন্তু জেলে ভরেও লাভ হয়নি। অভিযোগ, জেলে বসেই অপরাধের নেটওয়ার্ক চালাত সে।

এই মন্ত্রীর গাড়ির লালবাতি কেড়ে মন্ত্রিত্বে লালবাতি জ্বালাবেন মমতা?

এ রাজ্যেও রীতিমতো সক্রিয় সুবোধ সিংয়ের শাগরেদরা। বারবার নানা অপরাধে উঠে এসেছে কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারের নাম। ২০২০ সালে বারাকপুরে বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা খুন। কিংবা ২০২৩ সালে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝার হত্যা। সবেতেই নাম জড়িয়েছে সুবোধের।

তবে সুবোধের বিশেষত্ব সোনার গয়না চুরিতে। অনেকেই বলেন, ভারতের জুয়েল থিফ সুবোধ। কয়েক বছরে বাংলার একাধিক সোনার দোকানের ডাকাতিতে সুবোধ গ্যাংয়ের নাম জড়িয়েছে। কখনও সোজাসুজি সোনার ব্যবসায়ীকে ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি। কখনও আবার সরাসরি সোনার দোকানে ডাকাতি। বারবারই সুবোধ গ্যাংয়ের নাম জড়িয়েছে। এ মাসেই রানিগঞ্জে একটি সোনার দোকান লুট হয়। ডাকাত দল পালানোর সময় পুলিশের সঙ্গে চলে গুলির লড়াই। তদন্তকারীদের সন্দেহ ওই ডাকাতির ঘটনার মাস্টার মাইন্ড সুবোধ সিং।

ফের দুর্ঘটনা! হাবড়ায় রেলগেট গিয়ে পড়ল ওভারহেডের তারের ওপর, বন্ধ ট্রেন চলাচল

এর কয়েকদিনের মাথায় বেলঘরিয়ার রথতলায় অজয় মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চলে। অভিযোগ এর পিছনে ছিল সুবোধ সিং। এখানেই শেষ নয়, পরে সেই ব্যবসায়ীকে বিহারের জেলে বসেই হুমকি ফোন। এরপর বারাকপুরের এক ব্যবসায়ীকে হুমকি ফোনের পিছনেও বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিং রয়েছে বলেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। সেই সুবোধ সিংকে রবিবার আদালতে তুললে একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন আসানসোল আদালতের বিচারক।