CPIM: ‘শূন্যে’র থেকে রেহাই কবে? পিকের মতো ‘আইপ্যাক’ গড়তে বিজ্ঞাপণ সিপিএমের

 শূণ্যের গেরো কাটাতে সেই তৃণমূল-বিজেপির (BJP) দেখানো পথেই পা বাড়াচ্ছে বঙ্গ বামেরা। গত দশ বছর ধরে একটি আসনও জিততে সক্ষম হননি রাজ্যের সিপিএম (CPM) নেতৃত্ব।…

CPim is following tmc's path to recruiting a political consultant team

 শূণ্যের গেরো কাটাতে সেই তৃণমূল-বিজেপির (BJP) দেখানো পথেই পা বাড়াচ্ছে বঙ্গ বামেরা। গত দশ বছর ধরে একটি আসনও জিততে সক্ষম হননি রাজ্যের সিপিএম (CPM) নেতৃত্ব। নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাশিত না হওয়ার পর সিপিএমের  ((CPM) অন্দরেই এক নতুন  পথ  অনুসরণ করার দাবি উঠেছিল বিগত কয়েক বছর আগেই। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর, দলের ভিতর থেকে আসছিল এক নতুন দাবি—‘‘প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore) (পিকে) বা তাঁর মতো কোনো পেশাদার ক্যাম্পেইন কনসালট্যান্টের দরকার।’’ ছ’মাস পর, নভেম্বরে এসে সিপিএম সেই দাবি পূরণের পথে এক বড় পদক্ষেপ নিল। শুক্রবার, দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন, দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট, গ্রাফিক ডিজাইনার এবং অভিজ্ঞ লেখকের মতো একাধিক পেশাদার কর্মী নিয়োগ করবে। 

উপনির্বাচন ফল বিশ্লেষণ তারপরই তৃণমূলের কর্মসমিতির বৈঠক

   

এই পদক্ষেপ সিপিএমের জন্য এক নতুন রাজনৈতিক কৌশলের সূচনা হতে পারে, যেখানে তারা শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রচারে নয়, বরং দলের অভ্যন্তরীণ কাজকর্মে পেশাদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিতে চায়। একদিকে যেমন, দলের ভিতরে পেশাদার ক্যাম্পেইন কনসালট্যান্টের প্রয়োজনীয়তার কথা উঠেছিল, অন্যদিকে সিপিএম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশান্ত কিশোর বা পিকে-র মতো কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে নিয়োগের কথা বলেনি। সেলিমের ভাষায়, ‘‘এতদিন মানুষ সিপিএমকে ডিজিটাল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখেছে, এবার সিপিএমকে প্রফেশনাল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখবেন।’’ 

আধাসেনা অভিযানে নিকেশ ১০ মাওবাদী, উদ্ধার বিপুল অস্ত্র সামগ্রী

বিজ্ঞাপন থেকে স্পষ্ট, সিপিএম এখন শুধু রাজনৈতিক বিশ্লেষকই নয়, আরো কিছু অভিজ্ঞ পেশাদারদেরও দলে যুক্ত করতে চায়। এই পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে দল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং দলের জন্য উপযুক্ত রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করতে চাইছে। এই ধরনের পেশাদার একজন ক্যাম্পেইন কনসালট্যান্টের মতোই নির্বাচনী পরামর্শ দিতে সক্ষম হবেন।গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দক্ষ লেখকদের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। যারা কেবল রাজনৈতিক বার্তা নয়, দলের ভাবমূর্তি এবং উদ্দেশ্যও সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবে।ভোটারদের কাছে আকর্ষণীয় হতে এবং বিভিন্ন প্রচারে ভিজ্যুয়াল কম্পোনেন্টের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এক্ষেত্রে গ্রাফিক ডিজাইনাররা ডিজিটাল মাধ্যমের মাধ্যমে সিপিএমের বার্তা আরও কার্যকরীভাবে পৌঁছাতে সাহায্য করবেন। ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এখন অপরিহার্য। সিপিএম ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য ডিজিটাল দুনিয়ায় সঠিকভাবে কৌশল প্রয়োগের জন্য দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট চাইছে

রাজনৈতিক বিশ্লেষক নিয়োগের মধ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। সিপিএম ইতিমধ্যেই দলের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ২০২১ সালে রাজ্যে নির্বাচনী ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ার পর, সিপিএমের নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছিল যে, যদি তারা বাংলায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চায়, তবে প্রয়োজন হবে নতুন কৌশল এবং পেশাদার পরামর্শের। বিশেষত, ‘‘শূন্যের গেরো’’ কাটাতে হলে ২০২৬-এর নির্বাচনের প্রস্তুতি আরও আগে থেকেই শুরু করতে হবে।

আদানীর ঘুষের টাকা এবার নাইডুর অন্ধ্রেও, জড়ালো জগনের নাম

তাদের লক্ষ্য একটাই: পশ্চিমবঙ্গে আবারও ভোটারদের মধ্যে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করা এবং ঐতিহ্যবাহী বামফ্রন্টকে শক্তিশালী করে তুলতে পেশাদারদের সাহায্য নেওয়া।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম বড় ধরনের পরাজয়ের মুখে পড়েছিল। একদিকে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে তারা ভোটে হারল, অন্যদিকে বিজেপির মাটি শক্ত করার প্রচেষ্টা নতুন করে দলের চিন্তা-ভাবনা বাড়িয়ে দিল। পরাজয়ের পর সিপিএমের অন্দরেই একাধিক বার এই ধরনের দাবি উঠেছিল, যাতে তারা নিজেদের রাজনীতি এবং নির্বাচনী কৌশল পরিবর্তন করে।

প্রশান্ত কিশোর (পিকে) এর আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনী কৌশল এবং ক্যাম্পেইন পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে, তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে তিনি ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এবং পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ী হওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দেখে সিপিএমও বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের নির্বাচনী কৌশলে একটি পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

এবং তাই, সিপিএম এখন প্রচারের মাঠে পেশাদার কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে পেশাদারিত্বের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছিলেন, তারা শুধু ডিজিটাল দুনিয়ার দিকে মনোযোগী নয়, বরং এখন পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দলের ভিতরেও একটি নতুন পরিবর্তন আনতে চান।

সিপিএমের ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে এই প্রস্তুতি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট, এবং গ্রাফিক ডিজাইনারের মতো পেশাদারদের নিয়োগ করার মাধ্যমে, তারা দলীয় কৌশলে একটি নতুন গতির সূচনা করতে চাইছে। একদিকে, যেখানে দলীয় আদর্শে কোনো পরিবর্তন হবে না, অন্যদিকে তারা আধুনিক নির্বাচন কৌশল গ্রহণ করবে, যা ভবিষ্যতে দলের শক্তির পুনর্গঠন এবং পশ্চিমবঙ্গে শক্তিশালী অবস্থান ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে।