বাগদা আসনে জট অব্যাহত, অধীরের চিঠিতে ‘অস্বস্তিতে’ জোট

নিউজ ডেস্ক: বাগদা আসনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিরোধী শিবিরে জটিলতা এখনও অব্যাহত। এরমধ্যে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির চিঠি বিরোধী জোটে সংঘাতের জল্পনাকে…

নিউজ ডেস্ক: বাগদা আসনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিরোধী শিবিরে জটিলতা এখনও অব্যাহত। এরমধ্যে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির চিঠি বিরোধী জোটে সংঘাতের জল্পনাকে জোরালো করে তুলেছে। আসন্ন উপনির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে বলে প্রথম থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাত্ করে বামেদের পক্ষ থেকে ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। প্রথ্মে আসন রফা নিয়ে ঠিক ছিল চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে রায়গঞ্জ এবং বাগদা আসন দুটিকে কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দেবে বামেরা। সেইমতো কথা এগোচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে সুরে তাল কাটল ফরোয়ার্ড ব্লক।

আলিমুদ্দিন সূত্রে জানা গিয়েছে, বামেদের ওপর একরকম চাপ দিয়েই বাগদা আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছে বাম-শরিক দলটি। এদিকে ২০১৬ ও ২০২১ গত দুটি বিধানসভা ভোটে বাগদা আসন থেকেই প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাগদায় প্রার্থী হয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রবীর কীর্তনীয়া। তবে মাত্র ৮,২৫০ টি ভোট পেয়ে তৃতীয় হন তিনি। ভোট শেয়ার ছিল মাত্র ৩.৭ শতাংশ। এই বিপুল মার্জিনে পরাজয়ের ফলেই কী ওই আসনে কংগ্রেসের প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছে বামেরা? কিন্তু বামেদের নিজেদের পারফরম্যান্স কতটা আশা জাগানো তা গত দশ বছরে বিভিন্ন নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে।

   

এই জোট জটিলতা আরও বাড়িয়ে দিল অধীর চৌধুরির চিঠি। বাগদা আসনটি যেন কংগ্রেসকেই ছাড়া হয়,সম্প্রতি এই মর্মেই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠিয়েছেন অধীর চৌধুরি। তবে সেই চিঠির প্রতুত্তর এখনও দেয়নি বাম নেতৃত্ব। তবে এই ‘চিঠি’র রাজনীতি কিন্তু একরকম হুঁশিয়ারী হিসেবেই দেখছে বাম শিবির। তাই অধীরের চিঠিতে জলঘোলা বাড়ছে বিরোধী জোটে। এমনটাই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিকমহল।

বাগদা কেন্দ্রটির রাজনৈতিক ইতিহাস খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে বামফ্রন্ট আমল থেকেই বাগদা কেন্দ্রটি বরাবরই ফরোয়ার্ড ব্লকের অধীনে ছিল। গত ২০১৬ বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী দুলাল বর বিরোধী জোট প্রার্থী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে পরাজিত করেন। তার আগে ২০১১ সালে তৃণমূল প্রার্থী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের হাতেই পরাজিত হন ফরোয়ার্ড ব্লকের মৃণাল সিকদারকে। আবার ২০০৬ সালেও তৃণমূলের দুলাল বরের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন ফরোয়ার্ড ব্লকের কমলাক্ষ্মী বিশ্বাস। সুতরাং গত দু-দশকের বেশি সময় ধরে বাম শরিক ফরোয়ার্ড ব্লকের হাতেই ছিল বাগদা। কিন্তু সময়ের চাকা ঘুরেছে। অনেক জল বয়েছে গঙ্গায়। একসময়ের ‘জমিদারী’চলে গিয়ে বামফ্রন্টের এখন অবস্থা ‘ভূমিহারা’ কৃষকের মতো। তবুও জোটধর্ম পালনের চেয়ে সম-মানসিকতাসম্পন্ন ফরোয়ার্ডব্লককেই কী পছন্দ আলিমুদ্দিনের? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

এদিকে এবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে গো-হারা হেরেছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ। তারফলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির চিঠিকে কে কী সত্যিই আমল দিতে নারাজ বাম-শরিক জোট? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যে রাজনীতির অলিন্দে। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার দরজা এখনই বন্ধ করতে চায় না বামফ্রন্ট। প্রয়োজনে আসন রফায় কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছে আলিমুদ্দিন।