কলকাতা: সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি ও সমাজ। ঘটনার তদন্ত নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা। সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কমিশনার জানান, “ঘটনাটি অত্যন্ত সেন্সিটিভ। তাই তদন্তের নির্দিষ্ট বিবরণ এই মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি।”
ঘটনার পরপরই দায়ের হয় এফআইআর। মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত-সহ তিনজনকে। পরে আরও একজনের বিরুদ্ধে পাওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কমিশনার আরও বলেন, “আমরা অনেক প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভিক্টিমের পরিচয় সংরক্ষণে আমরা অত্যন্ত সতর্ক, কারণ সুপ্রিম কোর্ট এবং হাই কোর্ট—দুই আদালতেরই স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে।”
তদন্ত কোন পর্যায়ে?
সূত্রের খবর, ঘটনার সময় কলেজ চত্বরে প্রায় ১৭ জনের উপস্থিতি ছিল। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, সেই সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ, লোকেশন ট্র্যাকিং এবং ভিক্টিমের বয়ানের সঙ্গে ঘটনাস্থলের তথ্যপ্রমাণ কতটা মিলে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার নির্যাতিতাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে (Place of Occurrence) গিয়ে ঘটনার ‘রিকনস্ট্রাকশন’ করা হয়েছে। সূত্রের দাবি, নির্যাতিতা যে বয়ান দিয়েছেন, তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের সঙ্গে মিলছে।
একই সঙ্গে পুলিশ খতিয়ে দেখছে ঘটনার পর কলেজ থেকে চারজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি কেন ও কীভাবে বেরিয়ে যান? তাঁদের বেরিয়ে যেতে কি কেউ নির্দেশ দেন, নাকি তাঁরা নিজেরা চলে যান?
আইনি লড়াইও জোরদার cp manoj verma on kasba case
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে তিনটি জনস্বার্থ মামলা (PIL)। আইনজীবীদের তরফে বিচারপতি সৌমেন সেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টেও একাধিক আবেদন জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর।
কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত
গণধর্ষণের অভিযোগে কার্যত স্তম্ভিত কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের গভর্নিং বডি সোমবার এক জরুরি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধই থাকবে ক্যাম্পাস।
সিপি-র সঙ্গে বৈঠকে বিজেপি প্রতিনিধি দল
সোমবার কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে বিজেপির ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি। তাঁরা বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে জমা দিয়েছেন দাবি ও প্রশ্নপত্র।
এই ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় উঠেছে। বিজেপি ও বিরোধী দলগুলির প্রশ্ন—”একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এত বড় ঘটনা ঘটে কীভাবে? প্রভাবশালী অভিযুক্তদের রক্ষা করা হচ্ছে না তো?”
আজ আদালতে তোলা হচ্ছে ধৃতদের
মঙ্গলবার মূল অভিযুক্ত-সহ ধৃত চারজনকেই আদালতে পেশ করা হবে। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে পুলিশ, যাতে আরও তথ্য বের করা যায়।