কলকাতা: কসবাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বিতর্কে জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। এবার অভিযোগ বালুরঘাট কলেজকে (Balurghat College) ঘিরে। কলেজের ইউনিয়ন রুমে মদ্যপান ও নারীর উপস্থিতি ঘিরে ভাইরাল একটি ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও ভিডিওটি ২০২২ সালের বলে দাবি করা হয়েছে এবং এর সত্যতা যাচাই করেনি Kolkata24x7.in। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই ফের চাপানউতোর শুরু হয়েছে ছাত্র রাজনীতি ও কলেজ প্রশাসনকে কেন্দ্র করে।
বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার এক্স (প্রাক্তন টুইটার) হ্যান্ডল থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, “বালুরঘাট কলেজের (Balurghat College) ইউনিয়ন রুমে মহিলা নিয়ে মদ্যপান করছেন টিএমসিপি সভাপতি। মদ, নারী ও নোংরা রাজনীতি—এই হল তৃণমূলের আসল রূপ। কসবা থেকে সন্দেশখালি, সব জায়গায় মহিলাদের উপর নিপীড়নের ডেরা হয়ে উঠেছে তৃণমূলের পার্টি অফিস ও ছাত্র সংগঠনের রুম।” এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে রাজ্যের ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
Drinks, Women, Dirty Politics. That’s the real face of TMC!
A 2022 video shows Balurghat TMCP President drinking with women inside a college union room. Yes, inside the campus!
From Kasba to Sandeshkhali, TMCP union rooms and TMC party offices have become dens of exploitation… pic.twitter.com/FsctJWiapE
— BJP West Bengal (@BJP4Bengal) July 6, 2025
২৫ জুন দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে এক আইনের ছাত্রীকে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন টিএমসিপি নেতা মনোজিৎ মিশ্র ও দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। কেবলমাত্র যৌন নির্যাতন নয়, সেই সঙ্গে উঠে আসে মনোজিতের ‘বেআইনি চাকরি’ পাওয়ার অভিযোগও।
সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই একের পর এক কলেজ থেকে উঠতে শুরু করেছে টিএমসিপি নেতাদের দাদাগিরি, অপেশাদার আচরণ এবং অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ। ভাঙড় মহাবিদ্যালয়, বারাসাত কলেজ, সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়, রাজা প্যারীমোহন কলেজ– সর্বত্র একই অভিযোগের প্রতিফলন।
এই পরিস্থিতিতে দলের প্রাক্তন নেত্রী রাজন্যা হালদার জানান, “মনোজিৎ মিশ্রর মতো লোক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্দরে এখনও অনেক রয়েছে। তারা সংগঠনকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও কলুষিত করছে।” তাঁর এই মন্তব্যের পরেই তিনি দলের অভ্যন্তরে রোষের মুখে পড়েছেন।
এই ধরণের ঘটনা প্রসঙ্গে রাজভবনের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “শিক্ষাঙ্গন যেন নিরাপদ ও শৃঙ্খলিত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।” নাগরিক সমাজের একাংশ ইতিমধ্যেই পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাঁদের দাবি, কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনীতি নয়, শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা হোক।
টিএমসিপির একাধিক নেতা-কর্মীকে ঘিরে ওঠা এই ধরনের বারংবার অভিযোগ রাজ্য সরকারের শিক্ষানীতি ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের অভাবকেই সামনে এনে ফেলেছে। প্রশ্ন উঠছে, এতগুলো প্রতিষ্ঠানে একই ধরনের অভিযোগ কেন?