পৃথক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজনীতি নয়, বিরোধীদের কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর

দাওয়াত এ ইফতারে ফুরফুরা শরীফে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রত্যেক বছরই তাকে দেখা যায় এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। এবছর তিনি আমন্ত্রন জানিয়েছিলেন নৌশাদ সিদ্দিকীকে। মুখ্যমন্ত্রীর এই…

https://kolkata24x7.in/wp-content/uploads/2025/03/mamata-4.jpg

দাওয়াত এ ইফতারে ফুরফুরা শরীফে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রত্যেক বছরই তাকে দেখা যায় এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। এবছর তিনি আমন্ত্রন জানিয়েছিলেন নৌশাদ সিদ্দিকীকে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান কে রাজনীতির রং দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। তাদের সাফ কথা মুসলিম তোষণের জন্যই মমতার এই ইফতারে অংশগ্রহণ। মুখ্যমন্ত্রীও পাল্টা বলেছেন দুর্গাপুজো কালী পুজোর মত হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তিনি সমান ভাবে অংশ নেন। পৃথকীকরণ নয় বরং পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ধর্মের মানুষ কে ঐক্যবদ্ধ করাই তার লক্ষ্য। বিধানসভাতেও বিরোধীরা মুসলিম তোষণের প্রসঙ্গ তুলে তাকে আক্রমণ করে এবং তার সাথে জঙ্গিদের আঁতাত আছে বলে অভিযোগ করে। তিনি বলেন, তিনি ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে, উল্টোপাল্টা অভিযোগ করলে তার প্রমান দিতে হবে।

short-samachar

   

রাজ্য বিজেপির নেতারা অবশ্য তাঁদের অবস্থানে অনড়। তারা দাবি করেছেন, মমতার এই পদক্ষেপ মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে সন্তুষ্ট করার কৌশল। বিজেপির এক মুখপাত্র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রতি বছর ইফতারে যোগ দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর পক্ষপাত দেখান। এটা রাজনৈতিক স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই নয়।” এই বিতর্ক বিধানসভাতেও উঠে এসেছে। বিরোধীরা মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগের পাশাপাশি জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্রেরও দাবি তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রী এই অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছে, তাদের কাছে কোনও প্রমাণ নেই। আমি সব ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধা রাখি এবং রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করি।” তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, “যদি ইফতারে যোগ দেওয়া তোষণ হয়, তবে দুর্গাপুজো বা কালীপুজোতে যোগ দেওয়াকে কী বলবেন?”

>ইফতারে মমতার উপস্থিতি রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তৃণমূলের এক নেতা জানান, “দিদি (মমতা) সবসময় সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিশে থাকেন। এটা তাঁর সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক দর্শনের অংশ। বিজেপি এটাকে বিতর্কে টেনে এনে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, “মমতার এই ঐক্যের কথা কেবল মুখের বুলি। তাঁর কাজে সম্প্রদায়ভিত্তিক রাজনীতির ছাপ স্পষ্ট।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্ক আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। একজন বিশ্লেষক বলেন, “মমতা যে সব ধর্মের অনুষ্ঠানে অংশ নেন, তা সত্য। কিন্তু বিরোধীরা এটাকে তোষণের অভিযোগে রঙিন করে ভোটের মেরুকরণের চেষ্টা করছে।” তবে, মমতার সমর্থকরা মনে করেন, এই অভিযোগ তাঁর জনপ্রিয়তায় কোনও প্রভাব ফেলবে না। ইফতারের এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি যেমন তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ ইমেজকে তুলে ধরেছে, তেমনই বিরোধীদের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিয়েছে। এই বিতর্কের মধ্যে মমতা তাঁর অবস্থানে অনড় থেকে বলেছেন, “আমি আমার কাজে বিশ্বাসী। জনগণই আমার শক্তি।”