ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য রাজ্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই ঘোষণা গত বুধবার, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পক্ষ থেকে করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের কাজ আগামী ২ বছরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। দীর্ঘ দশকের দাবির পর এই বরাদ্দের ফলে ঘাটালবাসীরা আশা করছে, অবশেষে ঘাটালের উন্নয়ন শুরু হবে।
ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দাবি বহু বছর পুরনো। গত কয়েক দশক ধরে এই প্রকল্প নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আরামবাগে একটি প্রশাসনিক সভায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র যদি সাহায্য না করে, তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিজস্ব উদ্যোগে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে। সেই সময় ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেবও উপস্থিত ছিলেন।
লোকসভা নির্বাচনে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয় এবং নির্বাচনে ঘাটালে তৃণমূলকে ফের জয়লাভ করতে সহায়তা করে। তবে নির্বাচনের পর ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরু না হওয়ায় বিরোধীরা অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। সম্প্রতি, ঘাটাল মহকুমায় একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়, যেখানে সাংসদ দেব এবং মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে দেব বলেন, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
রাজ্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের পর, ঘাটালের বাসিন্দারা এটি একটি ভালো পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তারা আশা করছেন, এই বরাদ্দের ফলে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হবে এবং তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে সেখানে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বন্যার ঝুঁকি মোকাবিলায় বড় পরিবর্তন আসবে, এমন আশা স্থানীয়দের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
তবে এই বরাদ্দ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির ঘাটাল বিধায়ক শীতল কপাট। তিনি বলেন, “ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হোক, আমরাও চাই। তবে কেন্দ্র এবং রাজ্যের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। ৫০০ কোটি টাকায় এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে না। মাস্টারপ্ল্যানের নামে রাজ্য সরকার দলীয় নেতাদের জন্য চুরি-ডাকাতির সুযোগ তৈরি করছে।”
বিজেপির এমন অভিযোগের পর, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। তারা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় সাহায্য না পেলে বরাদ্দকৃত টাকার মাধ্যমে প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। ফলে রাজ্যের আর্থিক পরিকল্পনাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন বিরোধীরা।
এদিকে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে তারা দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ শুরু করবেন এবং ঘাটালের উন্নয়নে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।