সন্দেশখালিতে ইডির ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার চার্জশিট দিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। বিপুল পরিমান অস্ত্র লুকোতেই ইডির ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন শেখ শাহাজাহান। আর এই কাজে তাঁকে সহায়তা করেন তাঁর দুই ভাই শেখ আলমগীর ও গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে ইডির অভিযানের কথা আগাম জানতে পেরে যান সন্দেশখালির বাদশা শেখ শাহাজাহান। তখনই দেরি না করে তিনি ভাই শেখ আলমগীর ও গিয়াসুদ্দিন মোল্লাকে নির্দেশ দেন বাড়িতে মজুত করে রাখা অস্ত্র যেন সরিয়ে ফেলা হয়। বেশিরভাগই অস্ত্রই ছিল লাইসেন্স ছাড়া। সেই নির্দেশ মতোই তাঁদের সহযোগী আবু তালেবের বাড়িতে অস্ত্র রেখে আসে অভিযুক্ত শেখ আলমগীর ও গিয়াসউদ্দিন। তারপর ইডি আধিকারীকেরা সন্দেশখালিতে পা রাখলে তাঁদের ওপর চড়াও হয় গ্রামবাসীরা।
সেই হামলায় গুরুতর জখম হন ইডির আধিকারীকেরা। আর এই হামলার নেপথ্যে ছিল সেখ শাহাজাহান,এই লাইনেই চার্জশিট সিবিআইয়ের। পাশাপাশি ওই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি ঘটনার সময় নীরবভাবে দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে রাজ্য পুলিশ। সুতরাং চার্জশিটে রাজ্য পুলিশকেও কাঠগড়ায় তুলেছে সিবিআই। অভিযোগ গোটা ঘটনাটি সেদিন জানতে পারেন স্থানীয় পুলিশের এক সিভিক ভলান্টিয়ার। জানা গিয়েছে,ঘটনার দিন সকালেই গন্ডগোলের আঁচ পান ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। তিনি দেরী না করেই স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ কর্তাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয় সরবেরিয়াতে শেখ শাহাজাহান মার্কেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আধঘন্টারও বেশি সময় পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
গত ৫ জানুয়ারী রেশন দুর্নীতি মামলায় শেখ শাহাজাহানকে জেরা করতে তার সন্দেশখালির ডেরায় পা রাখেন ইডির কর্তারা। কিন্তু গ্রামে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের গাড়ি ঢুকতেই পথ আটকে বিক্ষোভ জানাতে শুরু করেন মহিলা গ্রামবাসীরা। তাঁদের সঙ্গে বাক বিতন্ডা বাঁধতেই ধাড়ালো অস্ত্র নিয়ে গ্রামবাসীরা ইড়ি কর্তাদের ওপর চড়াও হয়। ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ভর্তি ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁদেরকে দেখতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল সি.ভি.আনন্দ বোস।
লোকসভা ভোটের আগে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল জলঘোলা শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। এরপরই সন্দেশখালির মাটিতে কেঁচো খুড়তে শুরু করে গেরুয়া শিবির। তবে কেঁচো খুঁড়তে ‘কেউটে’ বেরোলেও ভোটবাক্সে তার প্রতিফলন মোটেও পাওয়া যায়নি। এইমুহুর্তে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরে অন্তর্কলহে রীতিমতো ছন্নছাড়া অবস্থা। তারমধ্যে সন্দেশখালি ইস্যুতে সিবিআইয়ের এই চার্জশিট কিছুটা অক্সিজেন জোগাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিকমহল।