পশ্চিমবঙ্গের গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের শীর্ষ নেতা মদন তামাংয়ের (Madan Tamang) অভিযুক্ত হত্যাকারীকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (CBI)। মদন তামাংয়ের হত্যার পর প্রায় ১৫ বছর পার হয়ে গেছে, তবে তাঁর হত্যাকারী শনাক্ত এবং গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা বেঙ্গালুরুতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এর ফলে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন এবং মদন তামাংয়ের পরিবারে এক নতুন আশার আলো দেখা দিয়েছে।
২০১০ সালের মে মাসে মদন তামাংকে ডালগাঁওয়ে একটি নির্বাচনী সভা থেকে বের হওয়ার পথে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে একটি বড় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে হত্যাকারী ধরতে না পারায়, গোর্খা জনগণের মধ্যে এক ধরনের হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। মদন তামাংয়ের পরিবার এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে হত্যার দ্রুত বিচার এবং খুনিদের শাস্তি চেয়ে একাধিক বার দাবি তোলা হয়েছিল।
প্রথমদিকে, মদন তামাংয়ের হত্যায় বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন ছিল, তবে সঠিক তথ্যের অভাব এবং প্রমাণের অভাবে তদন্ত থেমে ছিল। গত কয়েক মাসে সিবিআইয়ের দল এই মামলাটি পুনরায় খতিয়ে দেখে, এবং একাধিক গোয়েন্দা সূত্র এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা হত্যাকারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি বেঙ্গালুরুর একজন বাসিন্দা এবং তার নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে তাকে আগামিকাল আদালতে পেশ করা হবে এবং এই ঘটনায় আরও তদন্তের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা দাবি করেছেন যে, তিনি তামাং হত্যার মূল অপরাধী এবং অনেক দিন ধরে সে পলাতক ছিল।
মদন তামাংয়ের খুনিদের গ্রেফতারের ঘটনায় গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের নেতৃবৃন্দও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। গোর্খা জনমঞ্চের নেতা রোশন গিরি বলেছেন, “এটি আমাদের জন্য একটি বড় বিজয়। মদন তামাংয়ের হত্যার পর বহু বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু আজ তার হত্যাকারী ধরা পড়েছে, এটি গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন ও তামাং পরিবারের জন্য এক বড় উপলক্ষ। আমরা আশা করি, শীঘ্রই এই হত্যার বিচার হবে।”
মদন তামাংয়ের হত্যার পেছনে রাজনৈতিক কারণে কিছু শক্তিশালী ব্যক্তিদের যুক্ত থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষক। সিবিআই এর এই পদক্ষেপে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে নতুন আলোচনা সৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন এবং পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে।
এখন দেখার বিষয়, এই গ্রেফতারির পর আরও কী তথ্য সামনে আসে এবং মদন তামাংয়ের হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য কোনো অপরাধীর নাম প্রকাশ করা হয় কিনা।