কলকাতা: ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া ঘিরে শুরু হল নতুন আইনি অধ্যায়। Special Intensive Revision (SIR) নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এই মামলায় সবুজ সংকেত দেন। এর ফলে, SIR প্রক্রিয়া আদালতের সরাসরি তত্ত্বাবধানে আসতে পারে বলে মনে করছেন আইনজ্ঞদের একাংশ।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আদালতের হস্তক্ষেপ
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এদিন আবেদন জানান বামপন্থী আইনজীবী পিন্টু করার। তাঁর যুক্তি, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ছে। তাই এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ আদালতের পর্যবেক্ষণে হওয়া উচিত। আবেদনকারীর বক্তব্য, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আদালতের হস্তক্ষেপ এখন অত্যন্ত জরুরি।
পিন্টু করারের আবেদনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপিত হয়—
* ভোটার তালিকা সংশোধনের সময়সীমা বাড়ানো হোক।
* কেন এই বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া (SIR) চালু করা হয়েছে, তা নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন আদালতকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিক।
* ২০০২ সালের ভোটার তালিকা সম্পূর্ণ প্রকাশ করা হোক, যাতে প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা ও পরিবর্তন বিচার করা যায়।
বিস্তারিত শুনানির নির্দেশ
আদালত প্রাথমিকভাবে মামলা গ্রহণ করেছে এবং বিস্তারিত শুনানির নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আদালত চাইলে নির্বাচন কমিশনের মতামতও চেয়ে পাঠাতে পারে।
আইনজীবী মহলের মতে, এই মামলার মাধ্যমে SIR প্রক্রিয়া প্রথমবার আদালতের নজরদারি আওতায় আসতে পারে। তাঁদের দাবি, এর ফলে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ ও বিতর্ক অনেকটাই হ্রাস পাবে এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ
তবে রাজনৈতিক মহলে এই পদক্ষেপ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। অনেকের মতে, আদালতের তত্ত্বাবধান ভোটার তালিকা সংশোধনকে আরও বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ করে তুলবে। আবার অন্য মহল মনে করছে, এতে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও কার্যক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে।
রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাই এই মামলার গুরুত্ব যথেষ্ট। আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে যে প্রশ্ন উঠেছে, আদালতের এই হস্তক্ষেপ সেই বিতর্কে আইনি গুরুত্ব ও নতুন দিকনির্দেশনা যোগ করল।



