ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা: আদালতে কি জানালেন রাজ্য পুলিশের ডিজি?

নিউজ ডেস্ক: ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য প্রশাসন। সেই রিপোর্ট এদিন সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্য রাজনীতিতে। মঙ্গলবার হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা…

Calcutta-High-Court

নিউজ ডেস্ক: ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য প্রশাসন। সেই রিপোর্ট এদিন সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্য রাজনীতিতে। মঙ্গলবার হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। সেই রিপোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসার স্পষ্ট ছবি ধরা পড়ে। লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণা হয় ৪ জুন। তারপর থেকে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে সরব হয় বিরোধীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ জুন থেকে ১২ জুন প্রায় এক সপ্তাহে ৫৬০ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারমধ্যে ৯২ টি বিচার অযোগ্য মামলা হিসেবে পরিগনিত হয়েছে। ১০৭ টি ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ১১৪ টি মামলার কোনও অপরাধ খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার ৮৮ টি একই মামলার ভুয়ো অভিযোগ এসেছে। ১৮ টি অভিযোগের সঙ্গে হিংসার কোনও যোগ নেই। তিনটি মামলায় হিংসার অভিযোগ অসম্পূর্ণ। আর ১৩৮ ক্ষেত্রে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিল বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাষ্ট্রবাদী আইনজীবী সংগঠন বলে সংস্থা। তাদের করা মামলার ভিত্তিতেই গত ১৪ জুন রাজ্যকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার শুনানি হয় আদালতে। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এদিন এই মামলাটি পেশ করা হয়। রাজ্য পুলিশের ডিজির দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানি হয়। রাজ্যের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যে প্রশাসন কি করছে তা রাজ্যের কাছে স্পষ্ট জবাব চেয়েছে আদালত। এই বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। এই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে যখন সরগরম রাজ্যে রাজনীতি। ঠিক সেই মুহূর্তে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতির বিষয়টিও। বাহিনী আর কতদিন থাকবে তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিকমহলে।

   

নির্বাচন কমিশনের পূর্ব নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী ১৯ জুন পর্যন্ত রাজ্যে থাকার কথা কেন্দ্রীয় বাহিনীর। কিন্তু ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে গত সপ্তাহে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে পুজো পর্যন্ত বাহিনী রেখে দেওয়ার আর্জি জানান শুভেন্দু অধিকারী। তবে তাঁর দাবিকে মোটেও গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল। কেন্দ্রীয় বাহিনী বেশিদিন মোতায়েন রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি হতে পারে বলে পাল্টা মত রাজ্যের। মূলত, রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল গুলিতেই ক্যাম্প করে রাখা হয়েছে বাহিনীতে। এরফলে স্কুলে পাঠনপাঠনেও সমস্যা হচ্ছে বলে সরব হয়েছিল শিক্ষক-অভিভাবকেরা। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী কতদিন অবস্থান করবে এখন সেটা অনেকটাই নির্ভর করছে আদালতের নির্দেশের ওপর।

ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত কর্মীদের নিয়ে গত সপ্তাহেই রাজ্যপালের দারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু রাজভবনে ঢুকতে পুলিশ বাধা দিলে আদালতের দারস্থ হন তিনি। অবশেষে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ। তারপর গত রবিবার ১০০ জন আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বিরোধী দলনেতার মুখে গোটা পরিস্থিতি শুনে রাজ্যকে একরকম হুঁশিয়ারি দেন রাজ্যপাল। হিংসা বন্ধ করতে পুলিশ কর্তাদের বদলি করার কথাও জানান তিনি।