বালি মাফিয়াদের বালি চুরির কারণে ইস্পাত শহর বার্ণপুরের বিখ্যাত কালাঝরিয়া সেতুর পিলার ধসে পুরো সেতুটি মাঝ বরাবর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে (Burnpur Bridge Sand Mafia)। সেতু ভাঙার কারণে দামোদর থেকে পানীয় জল তোলার পাইপ লাইন বিচ্ছিন্ন। এই ঘটনার জেরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার বার্নপুরে তীব্র চাঞ্চল্য। অভিযোগ, শাসকদল তৃণমূলের মদতে বালি মাফিয়ারা এতটাই সক্রিয় যে প্রশাসনও ভীত। কোনওভাবেই তাদের আটকানো যাননি। এর ফল দু দশকের পুরনো বিখ্যাত কালাঝরিয়া সেতু ভেঙে পড়ল। বিগত বাম জমানায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল।
কালাঝরিয়া জল প্রকল্পের সেতু ভেঙে পড়ায় পানীয় জল সরবরাহে বাধা পড়েছে। সেতু ভেঙে পড়ায় জেলার আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ অনিশ্চিত। দুটি বিশাল পাইপ লাইন রয়েছে সেতুর দুই ধারে। মাঝখানে কংক্রিটের রাস্তা। সেতু ভেঙে পড়ায় পাইপ লাইন বিচ্ছিন্ন। সেতু ভেঙে পড়ার সময় পাম্প হাউসের এক কর্মী আটকে পড়েছিলেন। পরে তাকে স্পিড বোটে চাপিয়ে উদ্ধার করা হয়।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিআইএম সূত্রে খবর, কালাঝরিয়া জল প্রকল্প বামফ্রন্ট সরকারের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের সফল প্রকল্প। খনি-শিল্পাঞ্চলের আসানসোল জামুড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার ৫২টি গ্রামে পানীয় জল সরবরাহ করতে সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল।১৯৯৩ সালের ১৪ আগস্ট দামোদরের বুকে কালাঝরিযা জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু।
বাম নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর কয়লা ও বালি পাচার বেডেছে। বার্নপুরের কালাঝরিয়াতে প্রকাশ্যেই বালি পাচার হয়। এলাকাবাসী বলেছেন, বালি মাফিয়াদের জন্য এমন হলো। অভিযোগ,বারবার প্রশাসনের কাছে জানানো হলেও বালি পাচার বন্ধ করতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, কালাঝরিয়া সেতুর ৯-১০টি পিলার দামোদরের বক্ষে গ্রায় ৪০ ফুট বালি ধরে রেখেছিল। পাচারকারীঝ সেতুর পিলারের নিচ থেকে বালি তুলে নিয়েছে। ফলে পিলার দুর্বল হয়ে পানীয় জল সরবরাহের এই সেতু ভেঙে পড়েছে।
কালাঝরিয়া সেতু ভাঙার পর পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল, রানিগঞ্জ, উখড়া, অণ্ডাল, জামুড়িয়াতে চাঞ্চল্য। দামোদর তীরবর্তী বিভিন্ন অবৈধ বালি খাদানে পুলিশি অভিযান চলে। তবে স্থানীয়দের কটাক্ষ, এ সবই লোক দেখানো। পুলিশকে টাকা দিয়েই বালি ও কয়লা পাচার হয়।