শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: টানা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে নদী। তারই জলস্রোতে ভেঙে পড়ল কাঠের সেতু (Bridge Collapse)। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বাগপোতা এলাকার এই সেতু দীর্ঘদিন ধরেই ছিল এলাকার প্রধান যাতায়াত মাধ্যম। এই সেতু দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করত স্কুলপড়ুয়ারা। কিন্তু এখন সেতু ভেঙে পড়ায় তাদের স্কুলে পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্কুলে উপস্থিতির হার কমছে!
স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত কুমার পাল জানান, বিদ্যালয়ের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ওই সেতু ব্যবহার করে স্কুলে যেত। এখন সেতু ভেঙে (Bridge Collapse) যাওয়ায় তাদের অন্তত ৮-১০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। ফলে অনেক পড়ুয়া স্কুলে আসতে পারছে না। সামনে পরীক্ষা, অথচ উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাচ্ছে।
বিডিও-কে আবেদন প্রধান শিক্ষকের
এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রধান শিক্ষক চিঠি দেন চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও উৎপল পাইক-কে। তিনি জানান, দ্রুত সেতু মেরামতের ব্যবস্থা না করলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় বড় রকমের প্রভাব পড়বে। পড়ুয়ারা নিরাপদে স্কুলে আসতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে অভিভাবকদের মধ্যে।
বিডিও’র সেতু পরিদর্শন
অভিযোগ পাওয়ার পরই ব্লক প্রশাসন উদ্যোগী হয়। বিডিও উৎপল পাইক ব্লকের ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। ঘটনার বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখেন তারা। সেতুর ভেঙে যাওয়া অংশ, জলের চাপ এবং এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন তাঁরা।
বিডিও জানান, ‘‘প্রবল জলস্রোতের কারণে সেতুর একটি বড় অংশ ভেঙে গিয়েছে। ফলে স্কুলপড়ুয়াদের যাতায়াতের পথে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা দ্রুত সেতু সংস্কারের বিষয়ে পরিকল্পনা নিচ্ছি। জেলাশাসকের সঙ্গেও এবিষয়ে কথা হয়েছে।’’
প্রশাসনের আশ্বাস
জানা গেছে, অস্থায়ীভাবে একটি বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা করারও চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে অস্থায়ী সেতু তৈরি করে সমস্যার সাময়িক সমাধান করার ভাবনা রয়েছে প্রশাসনের। স্থানীয়দের কথায়, এই সেতু দীর্ঘদিন ধরে মেরামত হয়নি। বর্ষাকাল এলেই এই সেতু বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।
ছাত্র-অভিভাবকদের প্রত্যাশা
এখন সবাই চায়, দ্রুত যাতে নতুন বা মজবুত সেতু তৈরি হয়। শিক্ষার অধিকার যাতে বন্যা বা দুর্যোগের কারণে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটাই এখন প্রধান দাবি। ছাত্রছাত্রীরা যেন নিরাপদে স্কুলে পৌঁছতে পারে, সে দিকেও দ্রুত পদক্ষেপ চায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রশাসনের তৎপরতা
বিডিও জানিয়েছেন, ‘‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধান করতে চাই। পড়ুয়াদের যাতে আর স্কুলে আসতে সমস্যা না হয়, সেই দিকেই আমাদের নজর।’’ বর্তমানে এলাকায় বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং দ্রুত সেতু সংস্কারের কাজ শুরু করার লক্ষ্যে চলছে প্রস্তুতি।