ঘরোয়া কোন্দলে তোলপাড়, কলকাতায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা

দক্ষিণ কলকাতায় রবিবার বিজেপির (BJP) একটি দলীয় অনুষ্ঠানে মারাত্মক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আদি-নব্য কোন্দলে জর্জরিত বিজেপি (BJP) শিবিরের এদিন ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরের আনন্দনগর বাজার এলাকায়।…

BJP Workers Clash with Each Other in South Kolkata

দক্ষিণ কলকাতায় রবিবার বিজেপির (BJP) একটি দলীয় অনুষ্ঠানে মারাত্মক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আদি-নব্য কোন্দলে জর্জরিত বিজেপি (BJP) শিবিরের এদিন ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরের আনন্দনগর বাজার এলাকায়। সেখানে দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি (BJP) জেলা সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্যকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা দলের কিছু কর্মী-সমর্থকের মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়, যা দ্রুত হাতাহাতি ও চেয়ার-কালি ছোড়াছুড়িতে রূপ নেয়।

এ ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, যার পরে তা নিয়ে শহরজুড়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া একদল বিজেপি কর্মী ও সমর্থক দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় সদস্যপদ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে প্রশ্ন তোলেন কেন তাদের পদের অগ্রগতি হচ্ছে না। এই বিষয়ে কথা কাটাকাটির মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরপরই চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয় এবং জেলা সভাপতির এক অনুগামীকে গায়ে কালি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে।

   

দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি (BJP) সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য এই ঘটনার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এটি দলীয় অঙ্গনের মধ্যে সৃষ্ট গোষ্ঠী কোন্দলের ফলস্বরূপ একটি মারাত্মক ঘটনা। তবে, এই ধরনের কোন্দল নতুন নয়। দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা অভিযোগ উঠেছে। দলের একাংশের দাবি, জেলা সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য টাকা বা দামি সামগ্রীর বিনিময়ে দলের পদ দিয়ে থাকেন। এমনকি এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন চলছিল।

Advertisements

এই ঘটনাটি দলের মধ্যকার গোষ্ঠীকোন্দলকেই আরও তীব্র করেছে। রবিবার সন্ধ্যায় দলীয় কর্মীদের মধ্যে মারামারি এবং চেয়ার-কালি ছোড়াছুড়ির ঘটনায় বিজেপির অন্দরমহলে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি শিবিরের এই ঘরোয়া কোন্দল দলীয় ঐক্য এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এ ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বেশ হতাশ। তারা মনে করছেন, দলের মধ্যে এই ধরনের অশান্তি তাদের দলের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। একদিকে যেমন গোষ্ঠী কোন্দল প্রবল হচ্ছে, তেমনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি এই বিষয়টির প্রতি সঠিক নজর না দেয়, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে, এমন শঙ্কা করছেন অনেকেই।

এছাড়াও, রাজ্য বিজেপির মধ্যে ক্রমবর্ধমান গোষ্ঠী কোন্দল থেকে দলীয় সমর্থকরা হতাশ। রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে এমন সংঘাত সাধারণত দলের জন্য হানিকর হতে পারে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে। দক্ষিণ কলকাতার এই ঘটনার ফলে বিজেপির জন্য রাজনৈতিক চাপ আরও বাড়তে পারে।

বিষয়টি যদি দ্রুত সমাধান না হয়, তবে দলের ভেতরে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যা দলের কার্যক্রম এবং রাজ্য রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিজেপি কি এই কোন্দলের সমাধান করতে পারবে, নাকি এই ধরনের অশান্তি তাদের শক্তি ও ঐক্যকে আরও দুর্বল করে তুলবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।