স্কুল চলাকালীন সময়ে বিজেপি কর্মীর তাণ্ডব, প্রাণে মারার হুমকি দুই শিক্ষককে

ঝাড়গ্রাম: ফের রাজনৈতিক অশান্তির বলি শিক্ষাঙ্গন! এবার স্কুল চলাকালীন সময়ে ক্লাসরুমে ঢুকে শিক্ষকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল এক বিজেপি কর্মীর (BJP Worker) বিরুদ্ধে। শুধু তাই…

ঝাড়গ্রাম: ফের রাজনৈতিক অশান্তির বলি শিক্ষাঙ্গন! এবার স্কুল চলাকালীন সময়ে ক্লাসরুমে ঢুকে শিক্ষকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল এক বিজেপি কর্মীর (BJP Worker) বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এক সহ-শিক্ষককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় স্তরে শুরু হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য ও প্রতিবাদ।

Advertisements

ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের গিধনী চক্রের অধীন রানীপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতোই মঙ্গলবার সকালবেলায় স্কুলে ক্লাস শুরু হয়। ঠিক সেই সময়েই এলাকার এক বিজেপি কর্মী আচমকাই বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ে। অভিযোগ, তিনি কোনও পূর্ব অনুমতি ছাড়াই স্কুলে প্রবেশ করে শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ করতে শুরু করেন।

   

এরপর এক শিক্ষক মোবাইলে সেই ঘটনার ভিডিও করতে গেলে তাঁকেও শারীরিক নিগ্রহের চেষ্টা করা হয়। অভিযোগ, অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী প্রকাশ্যে সবাইকে হুমকি দেয়—স্কুল থেকে তাঁকে সরানোর চেষ্টা করলে তিনি ‘প্রাণে মেরে ফেলবেন’ শিক্ষকদের। প্রধান শিক্ষক ও এক সহ-শিক্ষকের উপর সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনার জেরে স্কুলের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। শিশুদের সামনে এমন রাজনৈতিক দাদাগিরি দেখে অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতেন, তবে এবার শিক্ষাঙ্গনের ভিতরে ঢুকে হুমকি ও মারধরের চেষ্টায় সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।

এই ঘটনার জেরে গোটা গ্রাম উত্তাল হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যালয়ের পাশে জড়ো হয়ে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জামবনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার গুরুত্ব বুঝে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে।

স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কড়া ভাষায় নিন্দা করে বলা হয়েছে— “বিজেপি এবার শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও রেহাই দিচ্ছে না। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষাক্ষেত্রকে কলুষিত করছে।”

অন্যদিকে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি দলের সক্রিয় সদস্য কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দলের তরফে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলেও স্পষ্ট জানানো হয়েছে।

এই ঘটনায় একদিকে যেমন শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেই নতুন করে সরব হয়েছেন শিক্ষা মহল, অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে— স্কুলের মতো সংবেদনশীল জায়গায় কীভাবে কোনও রাজনৈতিক কর্মী এভাবে অনধিকার চর্চা করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরাই।