কলকাতা ১৯,সেপ্টেম্বর: নদীয়া জেলার নবদ্বীপের বিখ্যাত মায়াপুর রক্তাক্ত (BJP Worker Killed)। আবারও সামনে এল তৃণমূলের গুন্ডাগিরি। বিজেপি করার অপরাধে খুন করা হল এক ব্যাক্তিকে এমনই অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসি এবং নিহতের পরিবার। নবদ্বীপের ৬ নং ওয়ার্ডের বিজেপি কার্যকর্তা, ৪০ বছর বয়সী সঞ্জয় ভৌমিককে বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তার পরিবার।
এই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে গতকাল, ১৮ সেপ্টেম্বর তারিখে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনাকে তৃণমূলের সন্ত্রাস বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিজেপি নেতৃত্ব এই হত্যাকে ‘টিএমসি-সমর্থিত দুষ্কৃতীদের কাজ’ বলে অভিযোগ করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পুলিশ রিপোর্ট অনুসারে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সঞ্জয়ের বাড়িতে হঠাৎ উপস্থিত হয় তারক দাস, গদাধর রায়, তাপস দাস, অরিন্দম মণ্ডলসহ ছয়-সাতজন ব্যক্তি।
তারক দাস নবদ্বীপের বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহার গাড়ির প্রাক্তন চালক এবং গদাধর রায় স্থানীয় টিএমসি বুথ সভাপতি। অভিযোগ, তারা কোনো প্ররোচনা ছাড়াই সঞ্জয়কে ঘর থেকে বের করে আনার পর বাড়ির উঠোনে ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু করে। স্টিক, লাঠি এবং হাত-পায়ের আঘাতে সঞ্জয় গুরুতর আহত হন। বাধা দিতে গেলে তার বাবা সুকুমার ভৌমিক (৬৫) এবং মা অলকা দেবী (৬০)-কে একইভাবে পেটায় আক্রমণকারীরা।
পরিবারের সদস্যরা চিৎকার করে সাহায্যের জন্য চেঁচিয়ে উঠলেও, প্রতিবেশীরা ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। আহত সঞ্জয়কে নবদ্বীপের একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে নিশ্চিত হয়েছে যে মৃত্যুর কারণ মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে লাগা গুরুতর আঘাত।
সঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যরা আঙুল তুলেছে স্থানীয় টিএমসি নেতাদের দিকে। সুকুমার ভৌমিক বলেন, “আমার ছেলে শুধু বিজেপির জন্য কাজ করত, কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এই হত্যা করেছে।” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেন রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী।” রাজ্যে আর গণতন্ত্র বলে কিছুই অবশিষ্ট নেই।
রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তান-চিনের আবেদন বাতিল, BLA-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত
এই হত্যা রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার ধারাবাহিকতা। বিজেপির দাবি অনুসারে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে টিএমসি-র হাতে প্রায় ৩০০-এর বেশি বিজেপি কর্মী খুন হয়েছে। নদীয়া জেলায় একাই গত এক বছরে ১৫-এর বেশি এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে কালিগঞ্জ এবং চাঁদপুর এলাকায় গুলি হত্যার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সঞ্জয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্থানীয় নেতারা পরিবারকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বলেছেন, “সঞ্জয়ের খুনীরা কঠোরতম সাজা না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।”