নন্দীগ্রাম: নন্দীগ্রামে ফের একবার বিজেপির (BJP) হাতে বড় জয়। শুক্রবার (তারিখ দিন) অনুষ্ঠিত হলো নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শ্রীপুর সমবায় সমিতির নির্বাচন। এই নির্বাচনে ১২টি আসনের সবকটিতেই প্রার্থী দিয়েছিল দুই প্রধান রাজনৈতিক দল—তৃণমূল কংগ্রেস ও ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে ফলাফলে দেখা যায়, বিজেপি একচেটিয়া ভাবে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। সবগুলো আসনে বিজেপি প্রার্থীরাই বিজয়ী হয়েছেন। একটিও আসন জিততে পারেনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
এই ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি (BJP) কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় বিজয় উদযাপন। নন্দীগ্রামের শ্রীপুর অঞ্চলজুড়ে বাজি ফাটানো, মিষ্টিমুখ, জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে মুখরিত হয় গোটা এলাকা। বিজেপি নেতারা বলছেন, এটা জনগণের রায়, তৃণমূল সরকারের প্রতি মানুষের বিরক্তি এবং শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি আস্থার প্রমাণ।
উল্লেখ্য, এই সমবায় সমিতিতে মোট আসন সংখ্যা ১২। এলাকার কৃষি ও আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত এই সমিতি স্থানীয় মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়। প্রশাসনের তরফ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করা হয়। ভোট প্রক্রিয়ায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
শ্রীরপুর সমবায় সমিতিতে বিজেপির এই জয়কে কার্যত নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর জনপ্রিয়তারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তারপর থেকেই নন্দীগ্রামে বিজেপির আধিপত্য ক্রমেই বেড়েছে। একের পর এক সমবায় সমিতি, পঞ্চায়েত স্তরে ভোটে বিজেপির জয় সেই প্রবণতাই স্পষ্ট করে তুলছে।
এদিকে এই ভরাডুবির পরেও তৃণমূলের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা অবশ্য অভিযোগের সুরে বলছেন, প্রশাসনিক স্তরে বিজেপি প্রভাব খাটাচ্ছে। যদিও জেলা প্রশাসন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর দাবি করেছে।
বিজেপির জেলা নেতৃত্ব বলছে, ‘‘এটা আমাদের সংগঠনের সাফল্য। মানুষের পাশে থাকলে, মানুষের জন্য কাজ করলে তার সুফল পাওয়া যায়।’’ এই নির্বাচনের ফলাফল পরবর্তী পঞ্চায়েত ভোট ও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই রাজনীতির ময়দানে বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। নন্দীগ্রামে বিজেপির এই ধারাবাহিক সাফল্য তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে যে এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।