একুশে জুলাইয়ে ‘চুপ’ গণতন্ত্র হত্যা দিবস, অন্তর্দ্বন্দ্বেই কী দিশেহারা বিজেপি?

কলকাতাঃ  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাইয়ের দিন রাজ্য জুড়ে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই কর্মসূচি মেনেই রবিবার রাজ্যের বেশকিছু জেলায় পালিত হল…

WB BJP

কলকাতাঃ  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাইয়ের দিন রাজ্য জুড়ে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই কর্মসূচি মেনেই রবিবার রাজ্যের বেশকিছু জেলায় পালিত হল বিজেপির এই পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। শুভেন্দু গড় বলে পরিচিত মেদিনীপুর, তমলুকের একাধিক জায়গায় বিজেপির গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালিত হল। তবে যতটা গর্জেছিলেন ততটা কিন্তু বর্ষালেন না।

লম্ফঝম্প অনেক হল, চলল মমতা-অভিষেকের ভাষণের কাটাছেঁড়া! কিন্তু বার্তা সেই অন্তঃসার

   

রবিবার বৃষ্টিভেজা দিনে একুশের মঞ্চে যখন অখিলেশকে পাশে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছেড়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল হয়তো এদিনই কলকাতার বুকে পাল্টা গণতন্ত্র হত্যাদিবস পালন করবেন শুভেন্দু। কিন্তু ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের সভার পরেও দেখা মিলল না রাজ্যের বিরোধী দলনেতার। তবে কী আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এলেন শুভেন্দু? এই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

রাজ্যসভায় নতুন বিল! পাশ হলেই অভিজিৎ গাঙ্গুলীকে ছাড়তে হবে রাজনীতি?

ভোটে ভরাডুবির পর শুভেন্দুর দিকে আঙুল তুলেছিলেন রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা। সেই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তারমধ্যে সম্প্রতি বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে দলের সংখ্যালঘু মোর্চাকে আর প্রয়োজন নেই।” এই সুরেই আওয়াজ তুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই মন্তব্যের জেরে ব্যাপক জলঘোলা শুরু হয় দলের অন্দরে। রাজনৈতিক মহলের মতে শুভেন্দুর সরাসরি এই সংখ্যালঘু ‘আক্রমণ’ রাজ্যে মেরুকরণ আরও তীব্রতর করার উদ্দেশ্যেই। যদিও শুভেন্দুর এই মন্তব্যের সরাসরি সমর্থন জানায়নি রাজ্য বিজেপি। তারপরই নিজের মন্তব্য নিয়ে সাফাই দেন শুভেন্দু।

ভারতীয় ডাকে ‘ডিজিটাল বিপ্লব’, আর থাকবে না পিনকোড-রাস্তার নাম

 শনিবার এই ইস্যুতে মুখ খোলেন বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি জামাল সিদ্দিকি। এদিন স্পষ্টত হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “শুভেন্দু দলে নতুন এসেছেন। তিনি দলের অনেক কিছুই ভালো মতো জানেন না। তিনি যা বলেছেন সেটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। জামাল সিদ্দিকির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফের চাপানউতোর শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। দলের সঙ্গে তাঁর লাইন না মেলায় তাঁর নের্তৃত্ব নিয়েও আগামীদিনে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এদিকে রবিবার বাঁকুড়ায় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে দলের সমালোচনা করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন,        ” আমরা সংগঠন জানি, কিন্তু  ভোট করাতে পারিনা।”  তার পাল্টা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন সবে ২০১৭ থেকে রাজ্যে দল লড়াই করছে। মায়ের পেট থেকে সবাই সবকিছু শিখে আসেনা। আগামীদিনে নিশ্চয় ভালো ফল হবে।”

এরমধ্যে অখিলেশের যোগদান তৃণমূলের ২১ জুলাইকে জাতীয়স্তরে রাজনৈতিকভাবে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুললো বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। লোকসভা ভোটেও উত্তরপ্রদেশে বিজেপির থেকে এবার অপ্রত্যাশিত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে অখিলেশের দল। উত্তরপ্রদেশের ৮০ টির মধ্যে ৪০ টির ওপর আসন জিতে যোগীদের ঘুম উড়িয়েছে সমাজবাদী পার্টি। উত্তরপ্রদেশে অখিলেশের জয় মোদী বিরোধী ইন্ডিয়া জোটকে ২৪০ টা আসন পেতে সাহায্য করেছে। তাই বর্তমান জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অখিলেশের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছে। এবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে ইন্ডিয়া জোটের এই নেতার একই মঞ্চে অবস্থান মোদী বিরোধী জোটকে আরও ঐক্যবদ্ধ করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।