নির্বাচনের আগে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এই কর্মসূচির পরিকল্পনায় বঙ্গ বিজেপি!

bjp-rath-yatra-west-bengal-assembly-election-campaign

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি (BJP)। দলকে তৃণমূলস্তরে চাঙ্গা করতে সেই কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য সাড়া ফেলেছিল বলে মনে করেন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। তাই ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে ফের সেই পরীক্ষিত পথেই হাঁটার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। দলের শীর্ষস্তরে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

Advertisements

রাজ্য বিজেপির স্বীকারোক্তি, বহু জায়গায় বুথ-স্তরে সংগঠন প্রায় নিস্ক্রিয়। কর্মী-সমর্থকদের সক্রিয়তা কমে যাওয়ায় সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেই ঘাটতি পূরণে নতুন করে কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে এবং ভোটের আগে মণ্ডল থেকে বুথ পর্যন্ত দলীয় সংগঠন শক্তিশালী করতে রথযাত্রাকে কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে বঙ্গ বিজেপি।

   

এই সময়ে সিপিএম’র ঘোষণা করা ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ কর্মসূচিও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও তীব্র করেছে। লাল শিবিরের যাত্রার পাল্টা বার্তা দিতে এবং জনসংযোগ বাড়াতে বিজেপিও মাঠে নামতে আগ্রহী।

দলের সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী ৫টি জোনকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে পাঁচটি পৃথক রথবার করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রতি রথ পৃথক সংগঠন অঞ্চল থেকে যাত্রা শুরু করবে এবং মোট ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে পৌঁছনোর লক্ষ্য থাকবে।

জোনভিত্তিক পরিকল্পনা—
হাওড়া–হুগলি–মেদিনীপুর জোন: ১০টি লোকসভা কেন্দ্র
রাঢ়বঙ্গ, নদিয়া, কলকাতা ও উত্তরবঙ্গ জোন: প্রতিটিতে ৮টি লোকসভা কেন্দ্র

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এই রথযাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম রথের উদ্বোধন করতে পারেন দলীয় সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি. নাড্ডা। পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং শেষপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিও থাকছে সম্ভাবনার তালিকায়। যদিও এখনও সবই ভাবনার স্তরে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

Advertisements

চলতি সপ্তাহেই রাজ্য বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষিত হবে বলে দলে আলোচনা। এরপর প্রথম কার্যকারিণী বৈঠকেই রথযাত্রা ইস্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংগঠন ও প্রচারের মেলবন্ধনে ছাব্বিশের ভোটে আরও আগ্রাসীভাবে নামতে চাইছে রাজ্য বিজেপি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের বাজেটে ৩.৬০ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৮৬১ কোটি, মোট বাজেটের মাত্র ০.২৩ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, “উত্তরবঙ্গে বিজেপির মাটি সরে যাচ্ছে। যারা ভুল বুঝে বিজেপির দিকে গিয়েছিলেন, তাঁরা এখন ফিরে আসছেন। জন বার্লার মতো নেতারা চলে এসেছেন। হতাশা থেকেই বিজেপি অভিযোগ তুলছে।”

বঙ্গ বিজেপির এই সম্ভাব্য কর্মসূচি রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়াবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আগামী কয়েক সপ্তাহেই ছবি পরিষ্কার হবে—শীর্ষ নেতৃত্ব রথযাত্রার পক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কি না। আপাতত অপেক্ষায় রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।