কসবা থানা ঘিরে বিজেপির বিক্ষোভ, চলল লাঠি জ্বলল টায়ার

কলকাতার কসবা (Kasba-Police) এলাকায় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের এক ছাত্রীর উপর গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শহর। এই ঘটনার প্রতিবাদে কসবা থানার সামনে…

Kasba-Police station protest by BJP

কলকাতার কসবা (Kasba-Police) এলাকায় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের এক ছাত্রীর উপর গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শহর। এই ঘটনার প্রতিবাদে কসবা থানার সামনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

পুলিশের লাঠিচার্জের মধ্যেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ও ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও জনগণের ক্ষোভ থামছে না।

   

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ড: ঘটনার বিবরণ (Kasba-Police)

গত ২৫ জুন সন্ধ্যা ৭:৩০ থেকে ১০:৫০-এর মধ্যে সাউথ ক্যালকাটা (Kasba-Police) ল কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে ২৪ বছর বয়সী এক প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।অভিযোগকারিণীর বয়ান অনুযায়ী, মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, যিনি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দক্ষিণ কলকাতা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক, তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তিনি জাইব আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায় ওরফে প্রমিত মুখার্জি -এর সহায়তায় এই জঘন্য অপরাধ করেন। (Kasba-Police) অভিযুক্তরা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেলের হুমকি দেয়। ২৬ জুন কসবা থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মনোজিৎ ও জাইবকে তালবাগান ক্রসিং থেকে এবং প্রমিতকে ২৭ জুন ভোরে গ্রেফতার করে। ভুক্তভোগীকে চিকিৎসার জন্য চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং ফরেনসিক তদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিজেপির বিক্ষোভ ও পুলিশের প্রতিক্রিয়া

ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিজেপির যুব মোর্চা (বিজেওয়াইএম) দক্ষিণ কলকাতা ইউনিট কসবা থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। রাস্তায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলতে থাকে। প্রতিক্রিয়া জানাতে পুলিশের লাঠিচার্জ শুরু হয়। শুরু হয় ধস্তা ধস্তি এবং ধরপাকড়।

অন্যান্য সংগঠনের প্রতিবাদ

বিজেপির (Kasba-Police) পাশাপাশি, অভয়া মঞ্চ এবং কংগ্রেসের কর্মীরাও কসবা থানার সামনে বিক্ষোভে অংশ নেয়। অভয়া মঞ্চের সদস্যরা ‘হচ্ছেটা কী?’ স্লোগান তুলে রাজ্যে নারী নিরাপত্তার অবনতির প্রতিবাদ জানায়। এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই-এর কর্মীরাও থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে, যা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে রূপ নেয়।

Advertisements

অভয়ার বাবার বক্তব্য

আরজি কর (Kasba-Police) মেডিকেল কলেজে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার অভয়ার বাবা এই ঘটনার পর মুখ খুলে বলেন, “আমার মেয়ের ঘটনার পরও এমন ঘটনা ঘটছে। কলেজের ভিতরে এমন অপরাধে সরকারের বড় দায় আছে। গ্রেফতার তিনজনই টিএমসি-র সঙ্গে যুক্ত। তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।” তিনি আরজি কর মামলায় সিবিআই তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “তারা সত্য গোপন করছে।”

কসবা কাণ্ডে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে অভয়ার বাবা

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েরা নিরাপদ নয়।” শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেন, “এই ঘটনার বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন হবে।” টিএমসি নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “কলেজের ভিতরে এমন ঘটনায় পুলিশ কী করবে?” জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। টিএমসি দাবি করেছে, তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করেছে এবং ভুক্তভোগীকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।

পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা 

কলকাতা পুলিশ (Kasba-Police) কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা কলেজ পরিদর্শন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন এবং তদন্তে দ্রুত অগ্রগতির আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে সিসিটিভি ও নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় মহিলা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তদন্ত শুরু করেছে এবং পুলিশকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।