ডোরিনা ক্রসিং থেকে শুরু হয়েছে নবান্ন অভিযান (Nabanna)। অভয়া পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে চোর স্লোগান দিয়ে শুরু অভিযান। গার্ডরেল টপকাতে গিয়ে আটক একাধিক বিজেপি কর্মী। আটকে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। পুলিশের সঙ্গে হাত হাতি শুরু। ডোরিনা ক্রসিং থেকে শুরু হওয়া নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিজেপি কর্মীরা ‘চোর চোর’ স্লোগান দিয়ে এই অভিযান শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক দপ্তর নবান্নের দিকে অগ্রসর হওয়া। অভিযানের সময় গার্ডরেল টপকানোর চেষ্টাকালে একাধিক বিজেপি কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই ঘটনায় কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল অভয়া কাণ্ডের অভয়া কাণ্ডের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে দলের কর্মী ও সমর্থকরা পার্কস্ট্রিট চত্বর ও ডোরিনা ক্রসিং থেকে মিছিল শুরু করে। মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও, পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা এবং গার্ডরেল টপকানোর ঘটনায় পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পুলিশের অভিযোগ, মিছিলকারীরা পাথর ছুঁড়েছে এবং ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেছে। অন্যদিকে, বিজেপি কর্মীদের দাবি, পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ শুরু করেছে, যা সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পার্কস্ট্রিট চত্বরে মিছিল শুরু হওয়ার পর বিজেপি কর্মীরা ‘চোর চোর’ স্লোগান দিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে। মিছিলটি যখন ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে পৌঁছায়, তখন পুলিশের ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। কিছু কর্মী গার্ডরেল টপকানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটক করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পুলিশ জলকামান, লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পুলিশ পার্কস্ট্রিটে আটক করেছে। শুভেন্দু বলেন এ“পুলিশ নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের বেআইনি ভাবে আটকানোর চেষ্টা করছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম, কিন্তু রাজ্য সরকার আমাদের কণ্ঠ রোধ করতে চায়।” তিনি আরও দাবি করেন, এই অভিযানে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ব্যবহার করা হয়নি, এবং সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নিয়েছেন।
নবান্ন অভিযানের আগে থেকেই কলকাতা ও হাওড়ায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। পার্কস্ট্রিট, ডোরিনা ক্রসিং, সাঁতরাগাছি এবং হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করা হয়।
রাস্তায় অ্যালুমিনিয়ামের গার্ডরেল, বালির বস্তা এবং কন্টেনার ব্যবহার করে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে । আকাশপথে নজরদারির জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হয়। এই কড়া নিরাপত্তার কারণে কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
এই সংঘর্ষের ফলে পার্কস্ট্রিট ও ডোরিনা ক্রসিং সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সৌম্য গাঙ্গুলি বলেন, “নবান্নমুখী রাস্তাগুলি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।”
আন্দোলনকারীদের একাংশ দাবি করেছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশৃঙ্খল করার চেষ্টা হয়েছে। একজন প্রতিবাদকারী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি তুলছিলাম, কিন্তু পুলিশের অত্যাচারে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে।”
পার্কস্ট্রিট চত্বর ও ডোরিনা ক্রসিংয়ে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ভারতের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতির উপর নতুন করে আলোকপাত করেছে। এই ঘটনা রাজ্য সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ডুরান্ডের অঘোষিত নকআউটে বাগানের প্রতিপক্ষ ডায়মন্ড, ফ্রিতে ম্যাচ দেখবেন কোথায়?
পুলিশ ও বিজেপি উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও, সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও, এই ঘটনা ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলনের আশঙ্কা তৈরি করেছে।