মিশন বাংলায় শীর্ষ নেতাদের মোতায়েন করছে বিজেপি

goa-cash-for-jobs-scam-puja-naik-minister-ias-officer

বিহারে এনডিএ-র ব্যাপক জয়ের পর বিজেপি এখন পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে (BJP Bengal election strategy 2026)। দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনা অনুযায়ী, ‘মিশন বাংলা’-কে চূড়ান্ত সফল করতে বিজেপি এবার শীর্ষ নেতৃত্বকে সামনে এনে একাধিক আক্রমণাত্মক কৌশল গ্রহণ করছে। লক্ষ্য স্পষ্ট ১৬০ টি আসন জিতে বাংলা দখল।

Advertisements

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিহার বিজয়োৎসবের ভাষণ এখনো বিজেপির প্রচারযন্ত্রে বারবার শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, “গঙ্গা বিহার হয়ে বাংলায় প্রবাহিত হয়। তেমনই জয়ের স্রোত এবার বাংলায় পৌঁছবে।” এই রাজনৈতিক বার্তাই এখন বাংলার মাটিতে নতুন জয়যাত্রার স্লোগান।

   

রাজ্যের মোট ৯১ হাজার বুথের মধ্যে বিজেপি ইতিমধ্যে ৭০ হাজার বুথে কমিটি তৈরি করেছে। দলের কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, বুথই ভোটের আসল শক্তি, তাই ২০২৬ নির্বাচনের আগে বুথভিত্তিক সংগঠনকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পুনর্গঠন করা হচ্ছে।

বিশেষ ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) শেষ হলে মৃত ভোটারদের নাম বাদ পড়বে, যা বিজেপির মতে “ভোটার তালিকা সঠিক ও স্বচ্ছ করার বড় পদক্ষেপ।” বিজেপি দাবি করছে, অতীতে বামফ্রন্ট “scientific rigging”-এর মাধ্যমে মৃত ভোটারদের নাম ব্যবহার করে ভোটে জয়লাভ করত। নতুন তালিকা ও বুথ কমিটি সেই সংস্কৃতি পুরোপুরি মুছে দেবে।

বুথ স্তরে নির্বাচনী দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব, প্রাক্তন ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য। তিন বছর ধরে বাংলায় সংগঠন সুদৃঢ় করতে কাজ করছেন জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বংশল। দলীয় বিবাদ কমানো, অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখাই এখন তাঁর প্রধান লক্ষ্য।

Advertisements

বিজেপির অভ্যন্তরে মত, ২০২৬ নির্বাচনের প্রধান ইস্যু হবে মহিলাদের নিরাপত্তা। দলের বক্তব্য অনুযায়ী, মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও রাজ্যে মহিলাদের ওপর নির্যাতন, দুর্গাপুরের মেডিক্যাল ছাত্রীর গণধর্ষণ, ‘RG ট্যাক্স’ দুর্নীতি এই ঘটনাগুলি জনমনে ক্ষোভ তৈরি করেছে।

এক বিজেপি নেতা মন্তব্য করেন, “এই আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতিতে মানুষ স্পষ্ট বুঝে গেছে পরিবর্তন দরকার, আর উন্নয়নের জন্য বিজেপিকেই দরকার।” টিএমসির বিরুদ্ধে কাটমানি, দুর্নীতি, এবং বংশানুক্রমিক রাজনীতির অভিযোগকে সামনে আনবে বিজেপি। পাশাপাশি তথাকথিত ‘মুসলিম তোষণ’ও বিজেপির প্রচারের বিশেষ ইস্যু হবে। রাজ্যের বেকারত্ব, শিল্পহীনতা এবং ব্যাপক শ্রমমুখী অভিবাসনের ঘটনাও বিজেপি জোরালোভাবে তুলতে চাইছে।

বিজেপি নেতৃত্ব বলছে, “লক্ষ্মী ভাণ্ডার যতই জনপ্রিয় হোক, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের আর্থিক সহায়তা আরও বেশি ও ব্যাপক।” বিহারে এনডিএ ঘোষিত ১.৫ কোটি মহিলাকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা এই উদাহরণও বাংলায় প্রচারে বারবার তুলে ধরা হবে।

বিজেপির গণনা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের ১২০ টির বেশি আসনে তারা কখনো না কখনো জয় পেয়েছে। এই আসনগুলিকে শক্ত ভিত্তি ধরে এবার আরও ৪০-৫০ টির মতো অতিরিক্ত লক্ষ্যভিত্তিক আসনে প্রচার চালিয়ে মোট ১৬০ আসন জয়ের রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।