বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দু নিধন কাণ্ডে বেকায়দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)। এবার সেই মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন ভারতের পুরুলিয়ার (BJP) সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো (Jyotirmoy Singh Mahato)। একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংস অত্যাচার ও হিংসার ঘটনা ঘটছে।
সাংসদের অভিযোগ অনুযায়ী, মুহাম্মদ ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চলা এই সহিংসতার বিষয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘর ধ্বংস করা হচ্ছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সংখ্যালঘু নারীদের ওপর ধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচার চালানো হচ্ছে। এমনকি দুর্গাপূজা উদযাপনেও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
I write with anguish as Hindus in Bangladesh face unspeakable horrors under Muhammad Yunus’s leadership—mass killings, temple destruction & persecution. Nobel Committee, how can a ‘peace laureate’ allow this? Act now to condemn these atrocities & uphold the Prize’s integrity.… pic.twitter.com/ri4tc4bnx1
— Jyotirmay Singh Mahato (Modi Ka Parivar) (@JyotirmayBJP) December 6, 2024
চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গ তুলে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো আরও দাবি করেছেন, সংখ্যালঘু ধর্মগুরুদের নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, বাংলাদেশে চলমান এই হিংসা মুহাম্মদ ইউনূসের মদতেই পরিচালিত হচ্ছে, যা প্রকৃতপক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যার সমতুল্য।
মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো নোবেল কমিটির কাছে তাঁর শান্তি পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। সাংসদের মতে, নোবেল কমিটির উচিত এই বিষয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া এবং ভবিষ্যতে নোবেল প্রাপক নির্বাচনের জন্য আরও কঠোর নিয়মাবলী তৈরি করা।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, কুখ্যাত নোবেলজয়ী হেনরি কিসিঞ্জারের প্রসঙ্গ, যিনি এক সময় গণহত্যার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন। জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর বক্তব্য অনুযায়ী, কিসিঞ্জারের মতোই মুহাম্মদ ইউনূস এখন ‘হিন্দু হত্যাকারী কসাই’। নোবেল কমিটির দায়িত্ব হচ্ছে এমন ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করা, যারা নৈতিক মানদণ্ডে সর্বোচ্চ জায়গায় থাকেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সমাজ সংস্কারক হিসেবে যিনি একসময় প্রশংসিত ছিলেন, সেই মুহাম্মদ ইউনূস এখন নিন্দিত হচ্ছেন। জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর মতে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়া ইউনূসের সরকার ভারতবিরোধী প্রচার চালিয়ে নিজের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে।
সাংসদ আরও বলেন, “নোবেল কমিটি যদি মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল সম্মান প্রত্যাহার না করে, তবে তাদের নৈতিক দায় শেষ হয়ে যায় না। তাদের উচিত এই বিষয়ে সরাসরি অবস্থান নিয়ে তাঁর কৃতকর্মের নিন্দা করা।”
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ বরাবরই আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের বিষয়। তবে মুহাম্মদ ইউনূসের নাম এই বিতর্কে জড়িয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রচলনের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন ইউনূস।