আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে শনিবার সন্ধ্যায় ৩ টি সরকারি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন অভিনেতা তথা ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব। ভোটের আগে হঠাৎ করে দেবের এমন পদক্ষেপে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে তবে কি তিনি দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে চাইছেন? নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছে – তবে কি তিনি লোকসভা ভোটে আর দাঁড়াচ্ছেন না, নাকি রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে অভিনয়ের জগতেই মন দেবেন? এমন সব জল্পনার মাঝেই মুখ খুললেন দেবের বন্ধু তথা বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। কটাক্ষ করে হিরণ বলেন, লোকসভা ভোটে এবার দাঁড়ালে হেরে যাবেন তৃণমূল সাংসদ। তাই তিনি সব ছাড়তে চাইছেন।
রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি পদ, ঘাটাল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ এবং বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদে ইস্তফা দেন দেব। তবে ইস্তফা দেওয়ার কারণ জানাননি তিনি।
খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “বিলম্বে বোধদয় হয়েছে। উনি ভাল অভিনেতা। কিন্তু রাজনীতি করতে হলে ২৪ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। গত ১০ বছরে কতবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে গিয়েছেন দেব? ওনার জন্য ঘাটালের উন্নয়ন থমকে রয়েছে। এবার জেনেই দাঁড়াতে চাননি।“
সম্প্রতি দেব ইঙ্গিত দেন যে তিনি আর নির্বাচনে লড়তে চাননা। এরপর জেলাওয়াড়ি বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি বলেন, “দেব একটা ভাল ছেলে। শিল্পী মানুষ। দেব আমাদের সম্পদ।’ এর পর তিনি জেলার নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইয়কে বলেন, “তোদের জন্য দেব দাঁড়াতে চাইছে না। কী করেছিস তোরা?” কিন্তু পরে বৈঠকে দেব জানান দল তাঁকে যা করতে বলবে তিনি তা মাথা পেতে নেবেন।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সম্পর্কে হিরণ সংবাদমাধ্যমে বলেন, “ঘাটালে শিশু উৎসবে প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে মারামারি হয়েছে ওঁর। টেবিল ছোড়াছুড়ি হয়েছে, মারামারি হয়েছে। সাধুবাদ জানাই, ১০ বছর পর হলেও বোধোদয় হল বলে। রাজনীতি এবং অভিনয় একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। বার বার বলেছি, ওঁর কাজ অভিনয় করা। অভিনয় করতে করতে রাজনীতির নাম করে, পাঁচ বছরে বাদে একবার ভোট চাইতে আসব, তার পর জিতে গিয়ে আর আসব না, সংসদে যাব না। এটা কাজের কথা নয়। এই বোধোদয় আগে হলে ঘাটালের উন্নতি হতো।“