”ইভিএম বদল করা হয়েছে”, হেরেও অজুহাত খুঁজছেন নিশীথ?

ইভিএম বদল করে তাঁকে ভোটে হারানো হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে সরব হলেন কোচবিহারের প্রাক্তণ সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। এই অভিযোগের পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এদিন…

ইভিএম বদল করে তাঁকে ভোটে হারানো হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে সরব হলেন কোচবিহারের প্রাক্তণ সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। এই অভিযোগের পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। হেরে যাওয়ার রেশ এখনও যেন তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর শরীরী ভাষাতেও ধরা পরেছে পরাজয়ের ধাক্কা। তাই ইভিএম ইস্যুকেই আপাতত হাতিয়ার করলেন দেশের প্রাক্তণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী।

কোচবিহার কেন্দ্রের একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে একশোটিরও বেশি ইভিএম বদল করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। শুধু তাই নয়, প্রায় আট শতাংশের ওপর ছাপ্পা ভোট হয়েছে বলে অভিযোগ নিশীথের। এইবছর লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন জগদীশ বাসুনিয়া। ভোটের আগে একরকম প্রত্যাশিতই ছিল হয়ত তিনিই জিতবেন। কারণ গত পাঁচ বছরে উত্তরবঙ্গের রাজবংশী অধ্যুষিত এই জেলায় একরকম জাঁকিয়েই সংগঠন তৈরি করেছিল রাজ্যের গেরুয়া শিবির। আর তার উপর উপরিপাওনা হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্বও নীশীথকে আরও অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিল।

   

রাজ্যের পাশাপাশি কোচবিহারে তিনি একরকম সমান্তরাল প্রশাসন তৈরিও করতে চেয়েছিলেন বলে কানাঘুষো শোনা যায় রাজনৈতিক মহলে। উত্তরবঙ্গে তাঁর অঙ্গুলীহেলনে বিজেপির সাংগঠনিক কার্যকলাপ পরিচালিত হত বলেও দলীয় কর্মীরাই দাবি করেন। সুতরাং ‘উত্তরবঙ্গের হোম মিনিস্টার’র এহেন পরাজয় মন থেকে মেনে নিতে পারছে না দল। জেতা আসনে অপ্রত্যাশিতভাবে হারের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পোস্টাল ব্যালেটে ৩৯৮১ টি ভোট পেয়েছেন নিশীথ । তাঁর প্রতিদ্বন্দী জগদীশ বাসুনিয়ার থেকে ১৩৫৩ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ইভিএম খুলতেই খেলা ঘুরে যায়। ইভিএমে নীশীথের প্রাপ্ত ভোট ৭৪৯,১২৫, অন্যদিকে,জগদীশ বাসুনিয়ার প্রাপ্ত ভোট ৭৮৮,৩৭৫। অর্থ্যাত জগদীশ বাসুনিয়ার থেকে ৩৯,২৫০ ভোটে হেরে যান প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ।

ভোটের আগে কোচবিহারে প্রচারে গিয়ে নিশীথ প্রামাণিককে গুন্ডা বলেও সম্বোধন করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। যদিও তখনও ফলাফল এমন হতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কোচবিহারবাসী। রাজনৈতিকমহলে কানপাতলে শোনা যায়, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গেও দহরম-মহরম সম্পর্ক রয়েছে নিশীথ । রাজ্যে রাজনীতিতে তথা উত্তরবঙ্গে গেরুয়া জয়জয়কারের নেপথ্য হেমন্তের প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে। যদিও উত্তরবঙ্গে গেরুয়া গড় কোচবিহার ভেঙে পড়ায় হতাশ বঙ্গ বিজেপি।

বুধবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে তৃণমূলের সেটিং নিয়ে সরব হয়েছিলেন রানাঘাটের জয়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এখন নিশীথের ইভিএম বদল তত্ত্ব মুখ রক্ষা করতে অজুহাত খোঁজার মতো পরিস্থিতি বলেই ধারনা রাজনৈতিকমহলের।